তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সোমবার রাতে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গণমাধ্যমকে ওবায়দুল কাদের যখন এ নির্দেশনার কথা জানান তখন ডা. মুরাদ চট্টগ্রামের পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে অবস্থান করছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপরসন তারেক রহমান ও তার কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিয়ে ডা. মুরাদ নানা মহলের সমালোচনায় ছিলেন। এরই মধ্যে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে আবার ডা. মুরাদের অশ্লীল কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়। প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হন বলে জানা যায়। বিষয়টি জানার পরপরই ডা. মুরাদ রাজধানী ঢাকা ছাড়েন। অনেকটা গোপনেই গত (সোমবার) তিনি চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে ওঠেন। এরপর ওইদিন রাতে হোটেলে অবস্থানকালীন তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারেন। ওই সময় প্রতিমন্ত্রী বেশ বিমর্ষ ছিলেন বলে জানা গেছে। এরপর মধ্যরাতে কর্তৃপক্ষের কাউকে না জানিয়ে আবার হোটেল ছেড়ে চলে যান প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, ডা. মুরাদের চট্টগ্রামে অবস্থানের বিষয়টি জানানো হয়নি সরকারের কোনো কর্মকর্তা কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এজন্য তার প্রটোকলের দায়িত্বেও কেউ ছিলেন না। চট্টগ্রামে প্রতিমন্ত্রীর এক বন্ধুর বাসায় এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত জানার পর মধ্যরাতে তড়িঘড়ি করে হোটেল ছেড়ে চলে যান ডা. মুরাদ।
জানতে চাইলে রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলের জনসংযোগ কর্মকর্তা রাফাত সালমান বলেন, আগে থেকে বুকিং করা রুমে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ উঠেছিলেন। সোমবার দুপুরে তিনি হোটেলে ওঠেন। পরে ওইদিন রাতেই হোটেল ত্যাগ করেন। তবে প্রতিমন্ত্রীর জন্য রুম কে বুকিং দিয়েছিলেন জানতে চাইলে বিষয়টি তার ‘জানা নেই’ বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) পদত্যাগপত্র দেন ডা. মুরাদ। প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো এ পদত্যাগপত্রে বলা হয়, ‘গত ১৯ মে ২০২১ (তিনি ভুল লিখেছেন, সালটি ২০১৯ হবে) স্মারকমূলে আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’