মা হারা একটি ছাগলছানা ও তার নিজের বাছুর কে দুধ খাওয়ানোর ঘটনায় রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এই দৃশ্য দেখতে সেখানে প্রতিদিনই ভিড় করছেন অনেক মানুষ। বিষয়টিকে মানুষের জন্য শিক্ষণীয় বলছেন স্থানীয় মুরব্বিরা।
দেখা গেছে, উপজেলা সদরের মেডিকেল পাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরে একটি গাভী ও একটি ছাগল পালন করছেন মরহুম সাংবাদিক ইমদাদুল হক মিলনের স্ত্রী মেহেরুন নেছা। সম্প্রতি গাভী এবং ছাগল দু’টিই বাচ্চা প্রসব করেছে। প্রসবের কিছুদিন পর মা ছাগলটি মারা যায়। উপায়ন্তর না পেয়ে গৃহবধূ চায়না ছাগলের বাচ্চাটিকে গাভীর দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। সেখানে সফলও হন তিনি। বাছুর ও ছাগলছানাকে দুধ দিতে থাকে গাভীটি।
গৃহবধূ জানান, জন্মানোর পর থেকেই গরুর বাছুর কে ‘বাহাদুর’ ও ছাগলছানাকে ‘রবি’ নামে ডাকি। ওই নামে ডাক দেলেই তারা ছুটে আসে। এছাড়াও গাভীটি একই সঙ্গে ছাগলছানা ও বাছুরকে দুধ দিচ্ছে। ক্ষুধা লাগলে নিজেই গাভীর দুধ খেয়ে নেয় ছাগল ছানাটি। গাভীর দুধ খেয়ে এখন ছাগলছানাটি বেশ বড় হয়েছে। বয়স প্রায় ৯ মাস। আর গরুর বাছুরটির বয়স প্রায় ১০ মাস। তাদের মধ্যে সখ্যতাও বেশ ।
স্থানীয় আব্দুল বারী স্বপন জানান, মানুষের মধ্যে মানবিকতার অনেক অভাব। কিন্তু গৃহপালিত জন্তুদের মধ্যে সহানুভূতি দৃশ্যমান। যা গাভীটি আমাদের শিক্ষা দেয়। মায়ের মৃত্যুর পর ছাগলছানাটির জীবনধারণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। গৃহবধূ যখন গাভীর বাটে ছাগল ছানার মুখ লাগিয়ে দিয়েছে তখন গাভীটি ফিরিয়ে দেয়নি। একই সঙ্গে নিজের বাচ্চা এবং ছাগলের বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে বড় করছে গাভীটি। ঘটনাটি দেখতে প্রতিদিনই সেখানে জড়ো হচ্ছেন উৎসুক মানুষ। তারা বিষয়টিকে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে দেখছেন।