কথায় বলে ভালোলাগা থেকেই ভালোবাসার উৎপত্তি। আবার এটাও সত্যি যে মুখে বললেই ভালোবাসা হয় না। এর জন্য প্রয়োজন মনের গভীর অনুভূতি। ভালোবাসার কাছে দুনিয়ার সবকিছুই হার মানে, এমন প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে পুরো বিশ্বে। এমনকি অসংখ্য উদাহরণও আছে আমাদের চারপাশে। যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জেমস এবং ক্লো লাস্টেড দম্পতি তেমনই এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে স্বামী-স্ত্রীর উচ্চতায় সবচেয়ে বেশি ব্যবধান হিসেবে নাম লিখিয়েছেন তারা।
পেশায় অভিনেতা ৩৩ বছর বয়সী জেমস। তার উচ্চতা ১০৯ দশমিক ৩ সেন্টিসিন্টার বা ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। অন্যদিকে, তার স্ত্রী ২৭ বছর বয়সী ক্লো পেশায় শিক্ষক এবং তার উচ্চতা ১৬৬ দশমিক ১ সেন্টিমিটার বা ৫ ফুট ৫ দশমিক ৪ ইঞ্চি। অর্থাৎ স্ত্রীর চেয়েও স্বামী প্রায় ২ ফুট (১ ফুট ১০ ইঞ্চি) ছোট। গত ২ জুন তারা গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লেখান।
‘ডিসট্রোপিক ডিসপ্লেসিয়া’য় আক্রান্ত জেমস। বিরল এই বামন রোগটির কারণে হাড় এবং তরুণাস্থির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। ভালোবেসে ২০১৬ সালে ক্লো\’কে বিয়ে করেন তিনি।
৩ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা কখনো জটিল সমস্যা জানিয়ে জেমস বলেন, তবুও অন্যরা যা পারে আমিও তা করতে পারি। কিন্তু সেটা বিকল্প পদ্ধতিতে। উচ্চতা কম হওয়ায় কখনো বিয়ে করতে পারবো বলেও ভাবিনি।
২০১২ সালে এই দম্পতির পরিচয় হয়। ওই সময় নিজ শহরে অলিম্পিক মশাল বহন করেন জেমস। তখন তার বন্ধুদের মাধ্যমে ক্লোর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর ২০১৩ সালের শেষ নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আনেন তারা। সাত মাস পর প্রথমবারের মতো নর্থ ওয়েলেসের একটি লেকে ভ্রমণ করতে গিয়ে জেমস ক্লো\’কে হাঁটু গেড়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং সম্মতি পেয়ে যান।
ক্লো জানান, নিজের থেকে অধিক উচ্চতার মানুষই তিনি পছন্দ করতেন। কিন্তু জেমসের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর সেই ধারণা পাল্টে যায়। মানুষ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেটি নিয়েই শুরুতে ভয় ছিল। আমাদের ভালোবাসার গল্প নিজেদের এবং অন্যদের এটা শিখিয়েছে যে, ব্যক্তি যেমনই হোক না কেনো তাকে ভালোবাসুন, যোগ করেন তিনি। বলেন, বাহিরের মোড়ক দেখে কাউকে বিচার করা যায় না।