১৯৭২ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় প্রাণে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাবা। সেই থেকে টানা ৪১ বছর, জঙ্গল থেকে বাইরে আসেননি হু ভ্যান ল্যাং। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই মানব সভ্যতার যোজন যোজন দূরে বাস করেছেন। যে কারণে মানবজীবনের অনেক জৈবিক চাহিদার বোধই তৈরি হয়নি ল্যাংয়ের মধ্যে। এ যেন বাস্তবের টারজান!
ভ্যান ল্যাং যৌনতা, নারী, সমাজ, রাষ্ট্র কোনও কিছুই বোঝেন না। ২০১৩ সালে নিঃশব্দে উদ্ধার করা হয় ল্যাংকে। স্থানীয় একটি গ্রামে এনে রাখা হয় তাকে। তারপর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক মানবজীবনের সঙ্গে ল্যাংয়ের পরিচয় হতে থাকে। মানবসভ্যতার সঙ্গে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন তিনি। প্রকাশ্যে এসেছে তার অজানা সেই গল্প।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে ল্যাংয়ের মা ও এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অপর দুই সন্তানকে নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যান ল্যাংয়ের বাবা। তারপর থেকে শিকার করে খাবার জোগাড় করতে বাদুড়, ইঁদুর খেতে শিখেছেন ল্যাং। এই পুরো বনবাসের মধ্যে কোনোদিন যৌনতা বা নারীদের নিয়ে বাবা একটিও কথা বলেননি ল্যাংকে। ল্যাংও কোনোদিন যৌন চাহিদা বোধ করেননি।
এমনকি পরে যখন ল্যাংয়ের বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়, তখনও তিনি আসতে চাননি। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, ভিয়েতনামের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। ২০১৫ সালে এই অদ্ভুত পরিবারের কথা প্রথম জানতে পারেন একজন চিত্রগ্রাহক। তিনি যখন ছবি তুলতে যান, তখন তাকে দেখে ভয়ে, আতঙ্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন ল্যাং ও তার বাবা।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ল্যাংদের কথা তখনই প্রকাশ্যে আনলে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমের ভিড় জমতে শুরু করত। তাতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তেন তারা। সে কারণে এতদিন পর তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সংবাদ সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা