ডাইনোসর বলতে জনপ্রিয় ধারণায় একটি অধুনা অবলুপ্ত, সাধারণত বৃহদাকার মেরুদণ্ডী প্রাণীগোষ্ঠীকে বোঝায়। এরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী এবং বৈজ্ঞানিকদের অনুমান এই প্রভাবশালী প্রাণীরা প্রায় ১৬ কোটি বছর ধরে পৃথিবীতে রাজত্ব করেছে।
ডাইনোসরদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বহুদিন ধরেই কাজ করছেন গবেষকেরা। একসময় তারাই দাপিয়ে বেড়াত এই পৃথিবীর বুকে। মানুষ আসার ঢের আগে তাদের সেই পদচারণার চিহ্ন আজও খুঁজে চলেছে মানুষ। উনবিংশ শতাব্দীতে প্রথম ফসিল খুঁজে পাওয়ার পর থেকে আজও ডাইনোসর নিয়ে নতুন নতুন আবিষ্কারের অন্ত নেই। এবার সন্ধান মিলল এই প্রাণীদের এক নতুন প্রজাতির। সারা পৃথিবীর প্রথম পাঁচ অতিকায় ডাইনোসরের মধ্যে জায়গা হবে এদের। আর কেবল অস্ট্রেলিয়ায় এরাই বৃহত্তম। এই নতুন প্রজাতির চলতি নাম ‘কুপার’।
ডাইনোসর পরিবারের অন্যতম সদস্য ছিল এই ‘অস্ট্রালোটাইটান কুপারেনসিস’। আজ থেকে ১০ কোটি বছর আগে তারা ঘুরে বেড়াত পৃথিবীর বুকে। কত বিরাট ছিল এদের চেহারা? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মোটামুটি ১৬ থেকে ২১ ফুট লম্বা ও ৮২ থেকে ৯৮ ফুট চওড়া ছিল এরা। সে কথা জানাতে গিয়ে এরোমাঙ্গা জাতীয় ইতিহাস মিউজিয়ামের কর্তা রবিন ম্যাকেঞ্জি জানাচ্ছেন, ‘‘এতদিন আবিষ্কৃত সব ধৱনের প্রজাতির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে এরা পৃথিবীর বৃহত্তম পাঁচটির মধ্যে একটি।’’
আজ থেকে ১৫ বছর আগে ২০০৬ সালে ম্যাকেঞ্জির পারিবারিক খামার অঞ্চল থেকেই এই ডাইনোসরের হাড় প্রথম পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে সেই সন্ধানের কথা গোপন করে রাখলেও পরের বছর ২০০৭ সালে প্রথমবার এদের কথা জনসমক্ষে আনা হয়। কিন্তু প্রাপ্ত হাড় ও কঙ্কাল থেকে এত বছর ধরে গবেষণা চালানোর পরে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন এই কঙ্কাল এমন এক প্রাণীর, যে ডাইনোসরদের এক নতুন প্রজাতির প্রতিনিধি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৩ডি স্ক্যান করে এই ডাইনোসরদের নিকটবর্তী প্রজাতির সঙ্গে এদের তুলনা করে তবেই এই সিদ্ধান্ত পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, ওই অঞ্চলে আরও বহু ডাইনোসরদের কঙ্কাল ও হাড়গোড়ের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আপাতত সেখান থেকে যা জানা গিয়েছে তা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। আগামী দিনে এই অঞ্চল থেকে আরও বড় বড় আবিষ্কার হতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।