রহিম রাজু। বয়স পঁচিশের কাছাকাছি। পিতার নাম মিজানুর রহমান। থাকেন আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায়। রাজুকে মাঝে মধ্যেই রাত ১২টার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলের সামনে দেখা যেত। ফজিলাতুন্নেছা হলের গলিতে বসে মোবাইলে পর্নো দেখতো উচ্চ সাউন্ড ব্যবহার করে। প্রায়ই সে মোবাইলের টর্চ ব্যবহার করে নিজের বিশেষ অঙ্গের দিকে আলোকপাত করে গান গেয়ে নাচানাচি করতো।
তার এমন বেহায়াপনা ও অঙ্গভঙ্গিতে অতিষ্ঠ ছিল ছাত্রী হলের মেয়েরা। ক্রমেই বাড়তে থাকে তার উৎপাত। অতিষ্ঠ ছাত্রীদের পক্ষ থেকে উপায় না পেয়ে এক ছাত্রী ছাত্রলীগের ভর্তি সহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে সহযোগিতা চায়।
মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগ কর্মী শিহাব তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলে, ‘যখন সে আবার হলের সামনে আসবে আমাকে একটু জানাবা’। যে কথা সেই কাজ। শুক্রবার মধ্য রাতে ছেলেটি আবার মেয়েদের হলের সামনে বখাটেপনা শুরু করে। খবর পেয়ে বাইকে করে এগিয়ে আসে এম এইচ হলের শিহাব, আলী আহসান ও দেলোয়ার হোসেন। এরই মধ্যে ডাকা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনকে। তারা সবাই হাজির হন ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে।
ঘটনা বেগতিক দেখে রাজুর ব্যর্থ পালানোর চেষ্টা। সফল নিরাপত্তা কর্মী শাহীন। রাজুকে গলি থেকে বের করে হলের সামনে হাজির করা হলো। ততক্ষণে উপস্থিতির সংখ্যা বেড়ে ১২ কিংবা ১৫ জনে।
মেয়েদের হলের দোতলা থেকে চিৎকার শুরু ‘ভাইয়া এই সেই লোক! ওকে ইচ্ছামতো পিটুনি দিন। ও যে অঙ্গ দেখাতো সেটা কেটে দিন।’ শুরু হলো গণধোলাই। মারধরের প্রভাব ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সে এমনটা আর করবে না বলে স্বীকারোক্তি দিলো। পরবর্তী পদক্ষেপ নিলো পুলিশ।
রাজুর বখাটেপনার বিষয়ে ওই হলের কয়েকজন ছাত্রী বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে সে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি, গান গাওয়া, পর্নো দেখা ও অনুকরণ করা ইত্যাদির মতো জঘন্য কাজ করতো। আমরা রীতিমতো তার ভয়ে আতঙ্কিত ছিলাম। এসময় মেয়েরা রাজুর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
মীর মশাররফ হোসেন হলের সিনিয়র ছাত্রলীগ কর্মী শিহাব উদ্দীন, শাখা ছাত্রলীগের ছাত্র বৃত্তি বিষয়ক উপ-সম্পাদক মোহাম্মদ আলী আহসান ও সহ-সম্পাদক দেলওয়ার হোসেনকে ফজিলাতুন্নেছা হলের মেয়েরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বখাটেকে মারধর করে। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেই।’ সূত্র: মানবজমিন
বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/নীল