৫০ বছর ড্রয়ারে থাকা গান্ধীর চশমা বিক্রি হলো আড়াই কোটিতে

ভারতের প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর এক জোড়া চশমা যুক্তরাজ্যের একজন বাসিন্দার বাসার ড্রয়ারে প্রায় ৫০ বছর ধরে পড়ে ছিল। সেই চশমা জোড়া নিলামে আড়াই কোটি টাকার (দুই লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড) বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার ছয় মিনিটের টেলিফোন নিলামে আমেরিকান একজন সংগ্রাহক চশমা জোড়া কিনে নেন। নিলামকারী অ্যান্ড্রু স্টো বলেছেন, ইস্ট ব্রিস্টল অকশন হাউসের জন্য এটা একটা রেকর্ড। খবর বিবিসি বাংলার।

ধারণা করা হয়েছিল, এই চশমা জোড়া সর্বোচ্চ ১৫,০০০ পাউন্ডে (১৫ লাখ টাকারও বেশি) বিক্রি হতে পারে। কিন্তু সেটি দাম যে এত বেশি হবে, তা ভাবেননি বিক্রেতা। অ্যান্ড্রু স্টো বলেছেন, গান্ধীর চশমা জোড়ার মালিক ব্রিটেনের ম্যাঙ্গোসফিল্ড এলাকার একজন বয়স্ক ব্যক্তি। তাঁর বাসার একটি ড্রয়ারে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চশমা জোড়া পড়ে ছিল। লকডাউনের সময় তিনি বাসা পরিষ্কার করতে গিয়ে চশমা জোড়া খুঁজে পান।

তাঁদের একজন আত্মীয় ১৯২০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকায় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার পর থেকে কয়েক প্রজন্ম ধরে চশমা জোড়া এই পরিবারে রয়েছে। নিজের জিনিসপত্র বিলিয়ে দেওয়ার খ্যাতি রয়েছে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর। চশমা জোড়া খুঁজে পাওয়ার পর মালিক নিলাম করার জন্য অ্যান্ড্রু স্টো নিলাম প্রতিষ্ঠানকে দেন। কারণ তিনি চেয়েছিলেন, চশমা জোড়া এমন কেউ কিনুক, যিনি এর ঐতিহাসিক মূল্য বুঝবেন। কিন্তু তিনি কল্পনাও করেননি যে, এর দাম এত উঠতে পারে।

অ্যান্ড্রু স্টো বলেছেন, \’এটা একটা আশাতীত ঘটনা। এই চশমা জোড়া শুধু আমাদের জন্য বিক্রির রেকর্ড তৈরি করেনি, এটার আন্তর্জাতিক ঐতিহাসিক গুরুত্বও তুলে ধরেছে। এটা খুব সহজেই চুরি হয়ে যেতে পারত, ভেঙে যেতে পারত অথবা হয়তো আবর্জনার বাক্সেও চলে যেতে পারত।\’

স্টোর ভাষায়, \’পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে এই চশমা জোড়া ড্রয়ারে পড়ে ছিল। এর মালিক আমাকে বলেছিলেন, এটা যদি বিক্রি করা না যায়, তাহলে যেন ফেলে দেওয়া হয়। আর এখন তিনি জীবন বদলানোর মতো টাকা পাচ্ছেন।\’

সাদা একটি এনভেলপের ভেতর ঢোকানো চশমা জোড়া ইস্ট ব্রিস্টল নিলাম হাউসের চিঠিপত্রের বাক্সে শুক্রবার রাত থেকে পড়ে ছিল। শনিবার সকালে খামটি খোলা হয়। এর দাম সম্পর্কে মালিকের কোনো ধারণা ছিল না এবং যখন তাঁকে বলা হয় যে, এটার মূল্য হয়তো ১৫ হাজার পাউন্ড হতে পারে, তখন তার \’প্রায় একটা হার্ট অ্যাটাক\’ হতে যাচ্ছিল। নিলাম থেকে পাওয়া টাকা মেয়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেবেন বলে জানিয়েছেন চশমা জোড়ার বিক্রেতা।

Scroll to Top