মহামারী করোনা সংকটে ইসলাম গ্রহণ মানসিক শক্তি দিয়েছে

অস্ট্রিয়ার একজন পেশাদার মার্শাল আর্ট ফাইটার ওয়েলহেম ওট। করোনা মহামারির সংকটে তিনি ইসলাম বিষয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পান। ইসলাম তাঁর হৃদয় প্রশান্ত করে এবং তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর খালিদ ওট নাম ধারণ করেন। নিজের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে আমি ইসলামের প্রতি আগ্রহবোধ করছিলাম।

যদিও ধর্মের প্রতি কখনো আমার গভীর অনুরাগ ছিল না। আমি রাজনীতি দ্বারাই প্রভাবিত ছিলাম। অস্ট্রিয়ার রাজনীতি সংখ্যালঘু মুসলিমদের জন্য বরাবরই বৈরী। যার কারণে নিকাব নিষিদ্ধ হয়েছে এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নানাভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, কিন্তু করোনা কোয়ারেন্টিনের সময় আমার ধর্মীয় বোধ জাগ্রত হয় এবং অন্তরের একত্ববাদের প্রতি গভীর আস্থা অনুভব করি।’

করোনা কোয়ারেন্টিনের সময় খালিদ ইসলাম বিষয়ে অধ্যয়ন করেন এবং রমজান শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে এপ্রিল ২০২০-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি ইসলাম গ্রহণ ও তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন। এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লেখেন, ‘একজন মুসলিম হতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি আমার কালেমা পাঠের বিষয়টি প্রকাশ করলাম। কেননা আমি চাই আমার বন্ধু ও প্রতিবেশীরা জানুক আমি কেন ইসলাম গ্রহণ করলাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণের লাভ সম্পর্কে আমি কী বলব ভেবে পাচ্ছি না।’

ইসলাম গ্রহণের পর খালিদ মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে জুমার নামাজেও অংশ নিয়েছেন। বন্ধুরা তাঁকে জার্মান ভাষায় অনূদিত কোরআনের কপি এবং একটি জায়নামাজ দিয়েছে। জীবনের প্রথম রমজানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে খালিদ বলেন, ‘একজন পেশাদার যোদ্ধা হিসেবে আমার মানসিক শক্তি প্রয়োজন এবং রোজা রাখার জন্য মানসিক শক্তির প্রয়োজন। আমি অনুভব করছি, আমার ধর্মবিশ্বাস আমার মানসিক শক্তি বাড়াচ্ছে। সারা দিন পানাহার না করে থাকা আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। আমি রমজানের প্রতিটি দিন আগের দিনগুলোর তুলনায় বেশি উপভোগ করেছি।’ মুসলিম বন্ধুদের আমন্ত্রণ এবং একসঙ্গে খাবার গ্রহণকেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন খালিদ ওট।

মাত্র এক মাস আগে ইসলাম গ্রহণ করলেও খালিদ এরই মধ্যে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছেন। নিজের ছেলেকেও তিনি রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। এ ছাড়া তিনি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোও গুরুত্বের সঙ্গে শিখছেন। কিছু সুরা ও নামাজের বিধানগুলো তিনি শিখতে সক্ষম হয়েছেন। সুরা ফাতিহা পাঠের একটি ভিডিও তিনি শেয়ার দিয়ে বলেছেন, ‘আমি এই সুরাটি ভালোবাসি।’

খালিদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে এবং বহু কিছু আগের মতো হয়ে যাবে। জীবনও আগের মতো চলতে থাকবে। বহুজন আগের জীবনে ফিরে যাবে। কিন্তু আমার সব কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। এই সংকট আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময়টি নিয়ে এসেছে। যেন আমার নতুন জন্ম হয়েছে এবং আমি যে মানসিক শক্তি অনুভব করছি, তা আগে কখনো করিনি। আলহামদুলিল্লাহ!’

Scroll to Top