পাওয়া গেছে করোনার আরও ৩ নতুন লক্ষণ

মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরে ছয় মাস কেটে গেলেও এখনও কমেনি আক্রান্তের হার। প্রতিনিয়তই দেশে দেশে করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বে ৫ লাখ ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছে আর আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এখনও ভাইরাসটি কীভাবে শরীরে আক্রমণ করে তা জানার চেষ্টা করছেন, প্রতিদিন আরও নতুন লক্ষণ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ন্যাশনাল ডিজিজ (সিডিসি) করোনাভাইরাসের লক্ষণসমূহের তালিকায় তিনটি নতুন লক্ষণ যুক্ত করেছে।

বুকে চাপ ধরা ও নাক দিয়ে পানি পড়া
করোনাভাইরাসের সর্বাধিক পরিচিত লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো শুকনো কাশি হওয়া বা সর্দি লাগা। সর্বশেষ অনুসন্ধান অনুসারে, রোগীদের ক্ষেত্রে সংক্রামণের প্রারম্ভিক দিনগুলোতে লক্ষণ হিসাবে বুকে চাপ ধরা এবং নাক দিয়ে পানি পড়া লক্ষ করা গেছে। অনেক ক্ষেত্রে, ভাইরাসটি নাক থেকে বিস্তার করেছে যা পরে নাকের ইনফেকশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বমি বমি ভাব
নিজেকে লুকিয়ে রাখা বা ছদ্মবেশ ধারণ করা সম্ভবত করোনাভাইরাসের অন্যতম স্বভাব। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন যে, বমি বমি ভাব বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো লক্ষণগুলো হালকা সংক্রমণের ক্ষেত্রে জড়িত হতে পারে। যারা কেবল গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যা অনুভব করেন এবং প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান না, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও বাড়তে পারে। পেটে ব্যথা, ক্ষুধা হ্রাস এবং স্বাদের অনুভূতি চলে যাওয়াও এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।

ডায়েরিয়া
আরও একটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইস্যুকে খারিজ করা উচিত নয়, তা হলো ডায়েরিয়া। জানা গেছে যে, অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগের মতো, করোনাভাইরাসও হজম সিস্টেমে আক্রমণ করতে পারে এবং একে ভারসাম্যহীন করে তুলতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলো সুস্থ হওয়ার গতি ধীর করে দেয়। আপনার যদি ডায়েরিয়ার লক্ষণ থাকে যেমন- পানিযুক্ত বা ঘন ঘন মল, পেট খারাপ হওয়া বা ৩-৪ দিনের জন্য পাকস্থলীতে সমস্যা বা করোনাভাইরাসের অন্যান্য পরিচিত উপসর্গগুলো দেখা দেয় তবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিন। এর জন্য জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

এর আগে অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শুকনো কাশি, দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, শ্বাসকষ্ট। এগুলো করোনাভাইরাসের সবেচেয়ে পরিচিত লক্ষণ। ভাইরাসের কিছু কম পরিচিত লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, গন্ধ বা স্বাদ অনুভূতি হ্রাস, বিভ্রান্তি, মাথা ঘোরা, চোখের ফ্লু, নীল ঠোঁট, তীব্র সর্দি, পেশী ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি। গবেষণায় দেখা গেছে ভাইরাসটি শিশু ও গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে ভিন্নভাবে আচরণ করতে পারে।

বিজ্ঞানীরা এখনও ভাইরাসটি শরীরে কীভাবে আক্রমণ করে তা আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলোর তালিকা ক্রমবর্ধমান হওয়ার সাথে সাথে বিশেষজ্ঞরা এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন। যদিও এটি আগে শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হিসাবে ভাবা হতো। এখন চিকিৎসকরা দেখছেন, বিভিন্নভাবে ভাইরাসটি দেহকে পঙ্গু করে দিতে পারে। নিউরোলজিকাল রিপ্লেস, অবক্ষয় এবং প্রদাহজনিত আক্রমণের ক্ষেত্রে ভাইরাসটি আমাদের কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি বিপজ্জনক।
:টাইমস অব ইন্ডিয়া

Scroll to Top