গোটা বিশ্বেই তাণ্ডব চালাচ্ছে মহামারী করোনা। আপনি আপনার প্রিয় সন্তানকে আদর করছেন। কিন্তু তার শরীরের বিশেষ ঘ্রাণ আর টের পাচ্ছেন না। তখন আপনার অনুভূতি কেমন হবে? সন্তানের শরীরের ঘ্রাণ আর না পাওয়ার কষ্ট নিশ্চয়ই আপনাকে কুরে কুরে খাবে। এখন মানুষের এই ঘ্রাণশক্তি কেড়ে নেওয়ার কাজটি করছে করোনাভাইরাস।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় সংক্রমিত হয়ে অনেকেই তাঁদের ঘ্রাণশক্তি হারাচ্ছেন। এমনকি করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও এই সমস্যা থেকে যাচ্ছে। অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে ঘ্রাণের অনুভূতি পাচ্ছেন না। করোনা মহামারির এই সময়ে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে ঘ্রাণশক্তি হারানো মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের ঘ্রাণশক্তি হারানোর বিষয়টি সম্ভবত একধরনের অদৃশ্য প্রতিবন্ধত্ব। এই সমস্যা দৃশ্যমান নয়। কিন্তু যে বা যিনি ভুক্তভোগী, তাঁর জন্য বিষয়টি বেশ পীড়াদায়ক। ঘ্রাণশক্তি না থাকলে স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাহিক জীবনযাপন করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ঘ্রাণশক্তি হারানোর ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত বাস্তবিক কোনো চিকিৎসা নেই।
ঘ্রাণশক্তি হারানো ব্যক্তিদের সহায়তাকারী ফ্রান্সভিত্তিক একটি সংগঠনের প্রধান জ্যঁ মিশেল মেইলার্দ বলেন, কেউ যদি ঘ্রাণশক্তি হারান, তাহলে তিনি জীবনের সব গন্ধ থেকেই বঞ্চিত হন। এটা একটা যন্ত্রণা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ধোঁয়া ওঠা কফির ঘ্রাণ না পেলে, গোসলের সময় গায়ে দেওয়া সাবানের ঘ্রাণ না পেলে, মজাদার সব খাবারের ঘ্রাণ না পেলে, ফুলের ঘ্রাণ না পেলে, নিশ্চয়ই তা ভুক্তভোগী ব্যক্তির জন্য বড় ধরনের পীড়ার কারণ।
ঘ্রাণশক্তি হারালে বড় ধরনের বিপদে পড়ারও ঝুঁকি থাকে। যেমন, ঘরে বা অফিসে ধোঁয়া ও আগুনের গন্ধ পাওয়া যাবে না। পাইপ থেকে গ্যাস বরোলে তার গন্ধও মিলবে না। কোনো কিছু পচে দুর্গন্ধ বের হলে তা পর্যন্ত টের পাওয়া যাবে না।
মেইলার্দ বলেন, ডায়াবেটিস, আলঝেইমারসহ নানা কারণে মানুষ ঘ্রাণশক্তি হারাতে পারে। এখন তার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো কোভিড–১৯। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় ঘ্রাণশক্তি হারানোর সমস্যার জন্য এ পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এ নিয়ে কাজ চলছে।