গত মার্চে মহামারী সংক্রমণের শুরুর দিকে যখন দেশে দেশে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তখন পর্তুগাল থেকে আর্জেন্টিনায় নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে চেয়েছিলেন হুয়ান ম্যানুয়েলা ব্যালেস্ত্রো। কিন্তু পারেননি। শেষ পর্যন্ত দুদেশের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধই হয়ে যায়। নিজ দেশে ফিরে যেতে হুয়ানের কাছে একটি মাত্র পথই খোলা ছিল। আর তা হলো আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়া।
নিজের ছোট্ট নৌকাটি নিয়ে একা একাই পর্তুগাল থেকে আর্জেন্টিনায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অনেকের কাছেই এটি এক অসম্ভব কাণ্ড মনে হলেও ৮৫ দিন পর আর্জেন্টিনায় পৌঁছে এক মহাকাব্য রচনা করেছেন হুয়ান।
পর্তুগালের ছোট্ট দ্বীপ পোর্ট স্যান্টোতে অবস্থান করছিলেন ৪৭ বছর বয়সী হুয়ান। মহামারীর সময়টি তিনি চাইলেই ওই দ্বীপে অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু আর্জেন্টিনায় পরিবারের কাছে পৌঁছাতে সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর নিজের ছোট্ট নৌকাটিই প্রস্তুত করতে শুরু করেন হুয়ান। ক্যানভর্তি টুনা মাছ, ফল, চালসহ অন্যান্য শুকনো খাবার ও পানীয় মজুদ করে মার্চের মাঝামাঝিতে অকূল সমুদ্রে পাল তোলেন তিনি।
পাল তোলা নৌকায় নিঃসঙ্গ নাবিকের একাকী আবেগ যাত্রাপথে বেশ ভালো করেই টের পেয়েছেন হুয়ান। প্রতি রাতেই অন্তত আধঘণ্টা রেডিওতে তিনি খবর শোনার চেষ্টা করেছেন। এটা বুঝতে চাইতেন যে, পৃথিবীতে এখন কোনো অবস্থায় আছে মহামারী। ভাবতেন, এটাই বুঝি তার জীবনের শেষ যাত্রা।
অবশেষে ১৭ জুন নিজের শহর মার দেল প্লাতার উপকূলে গিয়ে যখন হাজির হন হুয়ান। তাকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছিলেন অসংখ্য মানুষ। নায়কের বেশে তারা তাকে বরণ করে নেন। মার দেল প্লাতার উপকূলে প্রবেশ করেই একটি সফল অভিযানের স্বাদ পান হুয়ান।