একের পর এক সামনে আসছে মর্মান্তিক নিষ্ঠুরতার ছবি। পশু হত্যার নেশায় ডুবেছে ভারত। কিছুদিন আগেই কেরালায় অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে বিস্ফোরক ভরা আনারস খাইয়ে খুন করার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। তবে সেই ঘটনা থেকে যে কোন শিক্ষাই নেয়নি ভারতবাসী সেটার প্রমাণ পশ্চিমবঙ্গে নারকীয় কায়দায় একই সঙ্গে ৬টি ভাম বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যা।
আর সেই ঘটনা ধরা পড়েছে একটি ভিডিওতে। দেখা যাচ্ছে, একটি বড় গাছের তলায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৬টি ভাম বিড়ালের দেহ। তাদের মধ্যে কয়েকটি শাবকও রয়েছে। ভিডিওটিতে আরো দেখা যাচ্ছে, ওই গাছ থেকে একে একে নেমে আসছে হত্যাকারীর দল। কেউবা দেহগুলো বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিয়ে এসেছে মাছ ধরার জাল। দেহগুলোকে ওই জালের মধ্যে করে টেনে নিয়ে যাবে। হত্যাকারীদের মধ্যে কোনো অনুশোচনার লেশমাত্র নেই।
নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে সবং-এর এক প্রত্যন্ত এলাকায়। এরই মধ্যে পশুপ্রেমীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বন দপ্তরে। তারা পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনে ভাম বিড়াল মারা নিষিদ্ধ। তবুও এই ধরনের প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে দিনের পর দিন। ভাম বা গন্ধগোকুল ‘সিভেট ক্যাট’ নামে পরিচিত। বিড়াল প্রজাতির শান্ত প্রাণীটি আস্তে আস্তে অবলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, ওই এলাকার একটি গাছে নিহত ওই ছয় ভামবিড়াল একসঙ্গে থাকত। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে তাদের সকলকেই লাঠি–সোঁটা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ওই এলাকার সুভাষ সিং, রাজু মাণ্ডি, নির্মল কিস্কু, বিশ্বজিৎ হাজরা, রাজীব মুর্মূ-সহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। তারা সকলেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের।
গত বছরের নভেম্বরে উত্তর ২৪ পরগনার পলতায় ভাম বিড়াল মেরে পিকনিক করার একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। সেই ঘটনা ফেসবুকে পোস্ট করার পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। এই ঘটনায় প্রণয় বাউল ও বিশ্বজিৎ বিশ্বাস নামে দুই কলেজ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।