মহামারী করোনাভাইরাস থাবা বসিয়েছে সারাবিশ্বে। করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ বহু দেশ। তবে ভ্যাকসিন তৈরিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে চীন। দেশটির ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজির একটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন চীনে মানবপরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করেছে।
এরই মাঝে করোনায় ইউরোপে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া ইতালির শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মাত্তিও বাসেত্তি জানিয়েছেন, করোনার ভ্যাকসিন ছাড়াই ভাইরাসটি নিজ থেকেই শেষ হয়ে যাবে।
ইতালির সংক্রামক ব্যাধি ক্লিনিক পোলিক্লিনিকো স্যান মার্টিনোর প্রধান অধ্যাপক মাত্তিও বাসেত্তি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গত মাসে ভাইরাসটি তীব্রতা হারাতে শুরু করেছে। আগে যে রোগীরা এই ভাইরাসে মারা যেতেন এখন তারা সুস্থ হয়ে উঠছেন।
তিনি আরও বলেন, রোগীর সংখ্যা কমে আসার অর্থ ভাইরাসটির পুনরায় ফিরে আসা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের আর দরকার নাও হতে পারে।
অধ্যাপক মাত্তিও বাসেত্তি বলেন, আমার কাছে ক্লিনিক্যাল যে ধারণা রয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ভাইরাসটির তীব্রতায় পরিবর্তন এসেছে। মার্চ এবং এপ্রিলের শুরুর দিকে ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য পুরোপুরি ভিন্ন ছিল। ওই সময় জরুরি বিভাগে যারা এসেছিলেন তাদের চিকিৎসা দেয়াটা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাদের অক্সিজেন, ভেন্টিলেশনের দরকার ছিল। অনেকে নিউমোনিয়ায় ভুগতেন।
তিনি বলেন, গত চার সপ্তাহে ভাইরাসটির প্যাটার্নের ভিত্তিতে এই চিত্র পুরোপুরি পাল্টে গেছে। বর্তমানে শ্বাসযন্ত্রের ট্র্যাক্টের ওপর কম চাপ ফেলছে ভাইরাসটি। হয়তো ভাইরাসটির কোনও জেনেটিক মিউটেশনের কারণে এটি হচ্ছে। যদিও এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে এটি প্রমাণিত হয়নি। আমরা এখন রোগটি সম্পর্কে আগের চেয়ে বেশি সচেতন ও সামলাতে সক্ষম হয়ে উঠেছি।
বাসেত্তি বলেন, মার্চ এবং এপ্রিলে ভাইরাসটি ‘আগ্রাসী বাঘের’ মতো ছিল, বর্তমানে এটি বুনো বিড়ালে পরিণত হয়েছে। এমনকি ৮০-৯০ বছর বয়সীরাও এখন বিছানায় উঠে বসতে পারছেন। তারা কোনও ধরনের সাহায্য ছাড়াই শ্বাস নিতে পারছেন। আগে এই রোগীরা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে মারা যেত।
এদিকে, ব্রিটেনের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং রুথারফোর্ড হেলথের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা অধ্যাপক কারল সিকোরা বলেন, ব্রিটিশ জনগণের শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়েছে। নিজ থেকেই ভাইরাসটি নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে।