খুব দ্রুত আকারে বাড়ছে ভারতে করোনা সংক্রমণ। তবে দেশটিতে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ সময় পিছিয়ে গেছে বেশ কয়েক সপ্তাহ। লকডাউনের কারণে সংক্রমণের পরিমাণ কমেছে, তাই ‘পিক টাইম’ বা সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময় পিছিয়েছে। আর সেই সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দিতে পারে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। তখন ঘাটতি দেখা দিতে পারে আইসিইউ-শয্যা ও ভেন্টিলেটরের।
এমনটিই জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) গঠিত অপারেশনস রিসার্চ গ্রুপের গবেষণা।
শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৯২৯ জন। মারা গেছে ৩১১ জন। সমীক্ষা বলছে, লকডাউনের ফলেই ভারতে সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছাতে ৩৪ থেকে ৭৬ দিন দেরি হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গুছিয়ে নেওয়ার সময় মিলেছে। সংক্রমিতের সংখ্যা যা হওয়ার কথা ছিল, তার চেয়ে ৬৯% থেকে ৯৭% কম। বস্তুত, লকডাউনের পরে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও ৬০ শতাংশ জোরদার হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই গবেষণা।
এর ফলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসা পরিকাঠামোয় ঘাটতি হবে না। কিন্তু তার পরেই ৫.৪ মাস ধরে আইসোলেশন শয্যার অভাব দেখা দিতে পারে, আইসিইউয়ের শয্যার টানাটানি চলতে পারে ৪.৬ মাস এবং ভেন্টিলেটরের ঘাটতি থাকতে পারে ৩.৯ মাস ধরে। পরিকাঠামোর বর্তমান অবস্থার ওপর ভিত্তি করেই এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে ওই গবেষণায়। তবে গবেষকদের মতে, টানাটানির এই চিত্রটা যা হতে পারত, তার চেয়ে ৮৩% কম। এটি লকডাউনের ফলেই সম্ভব হয়েছে।
‘আনলক’ পর্বে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। কাল থেকে মুম্বইয়ে সীমিত সংখ্যায় লোকাল ট্রেন চালু হবে জরুরি পরিষেবার কর্মীদের জন্য। গবেষণা অনুযায়ী, জনস্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আওতা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো গেলে মহামারীর প্রকোপ কমতে পারে।
লকডাউনের সময়ে পরিকাঠামো যেভাবে বেড়েছে, তাতে শীর্ষ ছোঁয়ার পরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭০% এবং নতুন রোগীর সংখ্যা ২৭% কমে আসতে পারে। করোনার চিকিৎসায় ৬০% মৃত্যু ঠেকানো গেছে। তার এক-তৃতীয়াংশই সম্ভব হয়েছে জরুরি চিকিৎসার ঘাটতি পূরণের ফলে। করোনা রুখতে স্বাস্থ্য-খাতে সব মিলিয়ে জিডিপি-র ৬.২% খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছে ওই গবেষণা।