ব্রিটেনের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে, যিনি শনিবার বাজার করার জন্য লন্ডনের ওয়েট্রোস স্টোরের বাইরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। গতকাল লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল-এর সচিত্র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই করোনকালে তেরেসা মে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে মোবাইল হাতে লাইনে দাঁড়ানো। মোবাইলে তিনি কিছু দেখছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ভিভিআই পারসন হলেও তিনি তার জন্য কোনো ছাড় নেননি। তাই তিনি শুধু লাইনেই দাঁড়াননি, একই সঙ্গে রক্ষা করছেন সামাজিক দূরত্বও। এতে আরও বলা হয়, ‘তেরেসা মে এখন আর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা নন। তিনি এখন আর প্রধানমন্ত্রী নন। ব্রেক্সিটের বলি হয়ে গত বছর জুলাইয়ে ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের হাতে। তাকে এই করোনা সংকটকালে শনিবার দেখা গেছে স্থানীয় একটি ওয়েট্রোস দোকানের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি সামাজিক দূরত্ব রক্ষার এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তার পরনে ছিল স্মার্ট কালো ব্লেজার, লালচে একটি স্কার্ফ এবং গাঢ় সানগ্লাস। শান্ত মাথায় তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। কখনো মোবাইল চেক করছেন।
৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রেখে গুড ফ্রাইডে রাশ শপিংয়ের সময় তিনি হয়তো এ সময় বাকি বিশ্বকে দেখে নিচ্ছিলেন মোবাইলে। তিনি গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়লেও ব্যাকবেঞ্চের একজন এমপি এখনো। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ৬৩ বছর বয়সী ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এই এমপি ওই স্টোরে প্রবেশ করে ৪৫ মিনিট অতিবাহিত করেন। সেখানে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ঘুরে দেখেন। কিনে নেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এরপর একটিমাত্র ব্যাগ হাতে নিয়ে স্টোর ত্যাগ করেন।
এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করেন, তিনি খাবার মজুদ করে রাখার মতো পণ্য কেনেননি। তিনি সবটা নিয়ম মেনে কেনাকাটা করেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন না স্বামী ফিলিপ। তাকে তিনি সোনিংয়ের বাড়িতে রেখে এসেছিলেন। এই সোনিং এলাকায় বসতি জর্জ ক্লুনি, আমাল ক্লুনি ও লেড জেপেলিনের তারকা গিটারিস্ট জিমি পেইজের। প্রতিবেদনে তেরেসা মের একটি বিখ্যাত উক্তিও তুলে ধরা হয়।
তাতে তিনি বলেছিলেন, ‘তার দুষ্টুমির মধ্যে একবার তিনি গমের খেতের ভিতর দিয়ে দৌড়েছিলেন।’ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তিনি একটি বিরল বিবৃতি দিয়েছিলেন। সাধারণত তিনি খুব একটা কথা বলেন না। তবে তেরেসা মে ওই বিবৃতিতে বলেছিলেন, বরিস জনসন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময়ে তার প্রতি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সহমর্মিতা ও প্রার্থনা থাকছে। উল্লেখ্য, ব্রিটেনে এখন সব সুপারমার্কেটে সব কাস্টমারের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিধান চালু আছে। এটা করতে গিয়ে কখনো কখনো কাস্টমারের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে।
সেই লাইন কখনো চলে যাচ্ছে গাড়ি পার্কিং এলাকায়। ব্রিটিশদের এখন শুধু বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, শুধু যখন প্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার হবে তখনই যেন তারা বাইরে যান। অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ থাকলেও অনেক পরিবারকে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার বিভিন্ন স্টোরে বা দোকানে যেতে হচ্ছে।