কে হচ্ছেন আইএস প্রধান?

মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানের সময় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান আবু বক্কর আল বাগদাদির আত্মঘাতী হওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাঁর নিহত হওয়ার খবর এখনো নিশ্চিত করেনি আইএস। এরই মধ্যে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে, বাগদাদির উত্তরসূরি তাহলে কে হচ্ছেন?

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আইএস প্রধান হিসেবে বাগদাদির দীর্ঘদিনের সঙ্গী এবং ধর্মীয় পণ্ডিত ব্যক্তিরা আছেন এগিয়ে। আইএস বিষয়ে ইরাকি বিশেষজ্ঞ হিশাম আল হাশেমি বলেন, বাগদাদির উত্তরসূরি হিসেবে দুজন এগিয়ে রয়েছেন। তাঁরা হলেন আবু ওসমান আল–তুনসি ও আবু সালেহ আল জাজরাবি ওরফে হজ আবদুল্লাহ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত রোববার সকালে টেলিভিশন ভাষণে সিরিয়ায় উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবে বারিশা গ্রামে মার্কিন বাহিনীর অভিযানের মুখে নিজের কাছে থাকা সুইসাইড ভেস্ট বিস্ফোরণে নিহত হন বাগদাদি। এ ছাড়া সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কুর্দি বাহিনীর যৌথ অভিযানে আইএসের প্রথম সারির আরেক নেতা সংগঠনটির মুখপাত্র আবু হাসান আল মুহাজির নিহত হন।

হিশাম আল হাশেমি বলেন, আল–তুনসি তিউনিসিয়ার নাগরিক। তিনি আইএসের শুরা কাউন্সিলের প্রধান। শুরা কাউন্সিল আইএসের আইন প্রণয়ন ও পরামর্শক পরিষদের সর্বোচ্চ ফোরাম। দ্বিতীয়জন সৌদি আরবের নাগরিক। তিনি আইএসের তথাকথিত প্রতিনিধি কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন। প্রতিনিধি কমিটি আইএসের নির্বাহী পরিষদ।

আইএসবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য এই উত্তরসূরিদের যে কেউ আইএসের শীর্ষ পদে এলে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হবে। কারণ, আইএসের গেরিলা বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্যই ইরাক বা সিরিয়ার নাগরিকদের দিয়ে গঠিত। তাই তাঁরা অন্য দেশের নাগরিককে প্রধান হিসেবে সহজেই মেনে নেবে না। তিনি বলেন, এই ঘটনা আইএসকে বিভক্তির পথে নিয়ে যেতে পারে।

আরেক ইরাকি শিক্ষাবিদ ও জিহাদি বিশেষজ্ঞ আয়মান তামিমি বলেছেন, বাগদাদির স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন আত্মগোপনে থাকা হজ আবদুল্লাহ। তিনি আরও বলেন, ‘ফাঁস হওয়া আইএসের গোপন নথিতে বাগদাদির সহকারী হিসেবে উঠে এসেছে তাঁর নাম (হজ আবদুল্লাহ)। আমার জানা মতে, তিনি মারা পড়েননি। এ ছাড়া আইএসের সাধারণ পরিচালনা পর্ষদ ডেলিগেট কমিটির আমিরও ছিলেন তিনি।’

বাগদাদির উত্তরসূরি হিসেবে আরেকজনের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। তাঁর নাম আবদুল্লাহ কারদাশ। তিনি ইরাকি সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের সময় বাগদাদির সঙ্গে ইরাকি–মার্কিন কারাগার ক্যাম্প বুকাতে ছিলেন তিনি। আইএসের প্রচারমাধ্যম আমাকের বরাত দিয়ে এই খবর বেরিয়েছে। তবে বাগদাদি নিহত হওয়ার পর তাঁর স্থলে কারদাশকে মনোনীত করার কোনো কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি আইএস।

তামিমি ও হাশেমি উভয়ই বলেছেন, আমাকের নামে দেওয়া বিবৃতিটি ভুয়া। ওই বিবৃতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ইরাকি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে হাশেমি বলেন, কারদাশ দুই বছর আগেই মারা গেছেন।

হাশেমি আরও বলেন, আইএসের খলিফা হওয়ার পূর্বশর্ত হলো কুরাইশ গোত্রের সদস্য হতে হবে। কারদাশ ছিলেন তুর্কমেন গোত্রের। তিনি ইরাকের তাল আফতার অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। সেই কারণে খলিফা হওয়ার জন্য তিনি যোগ্য নন।

Scroll to Top