কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) বিকেলে চৌদ্দগ্রাম পৌর মিলনায়তনে দলীয় সভাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা গ্রুপ ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য হিরণ মোল্লা গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে হিরণ মোল্লাসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ২৫ জন আহত হন। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী জোবায়ের, চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মুন্সীরহাট ইউনিয়ন যুবদল কর্মী সবুজ, শ্রীপুর ইউনিয়নের বাইকগ্রামের সাইফুল, একই ইউনিয়নের ছাত্রদল কর্মী ইউসুফ, জনি, যুবদল কর্মী ইকবাল, উজিরপুরের আইয়ুব, কালিকাপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি মো. জাকির হোসেন, যুবদল কর্মী মহিন, আব্দুল্লাহ রুবেল, নাজমুল, টিটু ও মো.সোলেমান, আবুল খায়ের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম পৌর মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভার আয়োজন করা হয়। সোয়া ২টার দিকে জেলা ও বিভাগীয় নেতারা সভাস্থলে পৌঁছান। বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এসময় হিরণ মোল্লা-জুয়েল গ্রুপের লোকজন সভাস্থলে গিয়ে পৌর মিলনায়তনে প্রবেশ করতে গেলে কামরুল হুদার লোকজন তাদের বাধা দেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ২৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেন জুয়েল গণমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় কামরুল হুদা গ্রুপ ব্যতীত যাতে অন্য ডেলিগেট প্রবেশ করতে না পারেন এজন্য গেটে পাহারা বসায়। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে হকিস্টিক, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন। এতে আমাদের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সাজেদুর রহমান মোল্লা হিরণ গণমাধ্যমকে বলেন, নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে তারা আমাকে লাঞ্ছিত করেন এবং আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন। পরে পৌর মিলনায়তনে প্রবেশ করতে না পেরে আবুল খায়ের মার্কেটের সামনে এসে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করি। কিছুক্ষণ পর কামরুল হুদার লোকজন সেখানে গিয়েও আমাদের ওপর হামলা করেন। এতে আমাদের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, হিরণ মোল্লা ও জুয়েলের লোকজন সভাস্থলে পৌঁছে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে আমার অন্তত ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। তাদেরকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই তারা শান্ত হন। এ ঘটনায় হিরণ মোল্লা গ্রুপের লোকজন রাত ৯টার দিকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।