সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটির ভঙ্গুর দশা, দুর্ঘটনার শঙ্কা

যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব আর ক্রমশ ক্ষয়ক্ষতির মুখে ভঙ্গুর দশায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে নামার একমাত্র জেটি। ওপর থেকে আপতদৃষ্টিতে ঠিকঠাক মনে হলেও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে অবকাঠামোটি। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন পর্যটকরা।

স্থানীয়দের দাবি, জাহাজের ধাক্কা কিংবা উচ্চ জোয়ারে ঢেউয়ের আঘাতে যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে জেটিটি। তাই দ্রুত একটি নতুন জেটি নির্মাণের দাবি তাদের।

বঙ্গোপসাগরের বুকে সাড়ে আট বর্গকিলোমিটার দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এ দ্বীপে বসবাস করে প্রায় ১০ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা। আর পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিনই পর্যটকবাহী জাহাজে আসা-যাওয়া করে দুই হাজারের মতো পর্যটক। যাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌপথ।

সরেজমিন দেখা যায়, জাহাজ কিংবা ট্রলার যাত্রী বা মালামাল নিয়ে ভেড়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটিতে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ জেটির এখন বেহাল দশা। কোথাও রেলিং ভেঙে পড়েছে, পিলারে ফাটল ধরেছে, নিচের অংশের পুরো আস্তরণ উঠে বিপজ্জনকভাবে রড বেরিয়ে পড়েছে। জাহাজ সেন্টমার্টিন জেটিতে ভিড়লে নামার সময় পর্যটকরা বিপাকে পড়েন।

ঢাকা থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক হুমায়ুন আহমেদ বলেন, ‘এত সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র, কিন্তু প্রবেশমুখের জেটিটি বিধ্বস্ত ও জরাজীর্ণ। মনে হচ্ছে, যেকোনো সময় জেটিটি ভেঙে পানিতে পড়ে যাব।’

আরেক পর্যটক ইলিয়াস বলেন, ‘এই জেটিটি সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। কোথাও রেলিং নেই, আবার কোথাও কোথাও কাঠের পাটাতন দেয়া হয়েছে সেগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। যে কোনো সময় পানিতে পড়ে যেতে পারি এমন শঙ্কা রয়েছে। সত্যি কথা বলতে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেটিটি।’

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈরী আবহাওয়ায় জেটি একেবারে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়লে ২০২৩ সালে কাঠ বসিয়ে প্রাথমিকভাবে মেরামত করে চলাচল উপযোগী হয়। কিন্তু বছর না ঘুরতেই ফের বেহাল দশায় জেটিটি। এখন অনেক স্থানে কাঠ আর রেলিংও নেই। স্থানীয়দের দাবি, জেটির দেখভালের যেন কেউ নেই। নতুন একটি জেটি নির্মাণের জন্য বারবার তাগাদা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ‘এই ভাঙাচোরা জেটি নিয়ে খুব কষ্টে আছি আমরা। জরাজীর্ণ জেটির কারণে পর্যটকরা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন। জেলা পরিষদকে বারবার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। শুনেছি জেটির জন্য একটি বাজেট হচ্ছে। তবে সেটি কবে নাগাদ বাস্তবায়িত হবে, তা ঠিক নেই।’

উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেটিটি ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ; এ সমস্যা সমাধানে দ্রুতই পদক্ষেপ নিচ্ছে জেলা পরিষদ।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি সেন্টমার্টিনের একমাত্র জেটিটি ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই জেটি সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হবে। এটা নিয়ে প্রকল্প নেয়া হয়েছে।’

সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র জেটিতে পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিনই পর্যটকবাহী জাহাজ ভিড়ছে ৫টি আর স্থানীয় নৌযান ভিড়ে শতাধিক।

Scroll to Top