‘বসতবাড়ি সব শেষ, এখন আছে শুধু মানুষ’

পটুয়াখালীর পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা। রক্ষা পায়নি মসজিদ, মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে শত শত পরিবার। এ অবস্থায় স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে কথা হয় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার বাহেরচর এলাকার শান্তনা দাসের সঙ্গে; তিনি বলেন, ‘নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তিনি। স্বামী, সন্তান নিয়ে কোথায়, কীভাবে থাকবেন তার কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছেন না।’

শান্তনা দাস আরও বলেন, ‘নদীতে চার-পাঁচটা বাড়ি আমাগো শেষ হয়ে গেছে। এখন আছি শুধু আমরা মানুষ। আর কিছু নাই আমাগো। আমরা এখন মানুষের জায়গায় থাকি।’

তার মতো উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, গাছপালা। এ অবস্থায় অস্থায়ী নয়, স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসী বলেন, ‘ভাঙনের কবলে পড়ে অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। তারাও আমাদের চলে যেতে বলছেন। আমাদের বাড়িঘর সব গিলেছে নদী। আর যা আছে, সেটাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। এই রাক্ষসী পায়রা নদী আমাদের সবকিছু বিলীন করে দিয়েছে।’

তবে, স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্পগ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন।

তিনি বলেন, প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়ের সময় বা বর্ষাকালে নদীপাড়ের কিছু কিছু এলাকা ভাঙে। সেগুলো আমরা মেরামত করে থাকি। পরে আবারও সেখানে ভাঙন দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, স্থায়ী বেড়িবাঁধ করতে প্রকল্প হাতে নেয়া দরকার। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে আমরা এখনো তেমন কোনো বরাদ্দ পাইনি।

পটুয়াখালীতে মোট এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ কিলোমিটার এবং ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Scroll to Top