দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সন্ত্রাসী লেজুড়বৃত্তিক’ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বরিশালের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান।
নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে মানববন্ধনে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিটি কলেজ, সরকারি বরিশাল কলেজ, সরকারি পলিটেকনিক কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবিলম্বে ছাত্র সাংসদ নির্বাচন দিতে হবে। ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।
তাঁরা বলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্ররাজনীতির নামে হল দখল, সিট দখল, শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ছাত্ররাজনীতিতে বাধ্য করার যে সংস্কৃতি সেটা বন্ধ করার এখনই সময়। শিক্ষাঙ্গনকে কলঙ্কিত রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। সব শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনে হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে এবং চিকিৎসাসেবা কার্ডের মাধ্যমে সহজলভ্য চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিএম কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমি হকের সভাপতিত্বে ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএম কলেজের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন ও মারিয়াম বিনতে মোর্শেদ, বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাত আরা রিয়া, বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী সোহানুর ইসলাম, বরিশাল কলেজের শিক্ষার্থী রাইদুল ইসলাম ও নদী আক্তার, বরিশাল টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ইসান ইসলাম প্রমুখ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শত মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচারী সরকার পতন হয়েছে। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী এ অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য সারা দেশে লুটপাট, অগ্নিসংযোগে মেতে উঠেছে। এসব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে তাঁরা পাড়ায়-মহল্লায় শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছেন। অবিলম্বে প্রশাসনকে তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে মাঠে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। কেননা এই দেশ সবার। সবাই মিলে দেশকে একটি মানবিক সমাজে রূপান্তর করতে হবে।
বক্তারা এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সব পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আহত ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব প্রশাসনকে নেওয়ার দাবি জানান। এ ছাড়া, নিহত ব্যক্তিদের ‘জাতীয় বীর’ স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের নিজ শহরে স্মৃতিফলক উন্মোচন করার উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।