বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী হানাহানি, ভেদাভেদ চায় না মন্তব্য করে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের পতন-পরবর্তী সময়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। বর্তমান পরিস্থিতেতে জাতি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মিলেমিশে দেশটাকে গড়তে চাই। জামায়াত দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে।’
আজ শনিবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে পুলিশ-ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র-জনতাকে দেখতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির এ কথা বলেন। তিনি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইবনে সিনা হাসপাতাল ও সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ত্যাগ জাতি আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবে। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরণকামড় দিয়েছিল। তারা যেকোনোভাবে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। এ জন্য তারা ৩ থেকে ৫ আগস্ট সারা দেশে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অসংখ্য। তাঁদের কারও শরীরের একদিক দিয়ে গুলি ঢুকে অন্যদিকে বের হয়েছে। কারও হাত-পা গুঁড়া হয়ে গেছে। পেট ছিদ্র হয়ে গেছে। এসব দৃশ্য খুবই কষ্টদায়ক।
শফিকুর রহমান এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার বিশাল বিজয় অর্জিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘সিলেটে একজন সাংবাদিকও শহীদ হয়েছেন। সাংবাদিকেরাও আমাদের অংশ। তাঁরাও এই যুদ্ধে শরিক ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাও তাঁদের কাজ। আমাদের চেয়ে তাঁদের দায়িত্ব আরও বেশি। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁরা মারা গেছেন। তাঁদের ত্যাগ যেন আমরা সারা জীবন মনে রাখি।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরের উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, জেলা দক্ষিণের সাবেক আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা উত্তরের আমির হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, সিলেট মহানগর নায়েবে আমির মাওলানা সোহেল আহমদ, সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুর রব ও নুরুল ইসলাম বাবুল, জেলা উত্তরের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, সেক্রেটারি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহ-সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিন, সদর উপজেলা আমির নাজির উদ্দিন, সেক্রেটারি আল ইমরান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকেলে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হবিগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত সিলেট সদর উপজেলার মোস্তাক আহমদ ও ঢাকায় নিহত সদর উপজেলার ওয়াসিম আহমদের পরিবারকে সহমর্মিতা জানান। এ সময় তিনি নিহত দুজনের পরিবারকে নগদ এক লাখ টাকা হস্তান্তর করেন।