কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-অবরোধ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই বিক্ষোভে যোগ দেন ছাত্র শিবির, বামপন্থী কয়েকটি ছাত্র সংগঠন ও বিএনপির নেতাকর্মীরাও।
বুধবার সকাল থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া, বঙ্গন্ধু সড়কের ২নং রেলগেট, ফতুল্লার পঞ্চবটী ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুড়িতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালায় আন্দোলনকারীরা। দুপুরে আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে চাষাঢ়া গোলচত্বর এলাকায় ও প্রেস ক্লাবের সামনে পৃথক গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর চাষাঢ়া প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সড়ক অবরোধ করে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে তারা ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে রেল লাইনের ওপর বসে পড়েন। পরে চাষাঢ়া মোড় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করে স্লোগান দেন, ‘আমরা নই রাজাকার, তুই বেটা স্বৈরাচার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে’, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, কোটা সংস্কার ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তারা আরও নানা ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের কর্মীরা চাষাঢ়া এলাকায় রাজপথে বই-পুস্তক পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।
অন্যদিকে আরও শতাধিক বিক্ষোভকারী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুড়ি এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে বেলা ১১টা থেকে। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা সেই অবরোধ তুলে নেয়।
নারায়ণগঞ্জ মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আফসানা বলেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। কোটা সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা সড়কে থাকবো।
সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আবিদ বলেন, আমাদের আন্দোলনে বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। অনেকের প্রাণ গেছে। এ আত্মত্যাগ আমরা বৃথা যেতে দেবো না। সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার আহবান জানাই সকলকে।
শহরের অদূরে ফতুল্লার পঞ্চবটী এলাকাতে সড়ক অবরোধ করেন ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা।
এদিকে কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে চাষাঢ়ায় সড়কের মধ্যে যোহরের নামাজসহ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অপর গায়েবানা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় প্রেস ক্লাবের সামনে। এতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অংশ নেন জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত, জেলা যুবদলের আহবায়ক মশিউর রহমান রনিসহ স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী।