নিষ্পাপ দুই শিশুর সঙ্গে এ কেমন নির্মমতা, মরদেহ ভাসানো হলো নদীতে

এক টুকরো মাটি জুটল না পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর। শ্মশানে মাটিচাপা দিয়ে সমাহিত করার পর, পঞ্চায়েত নেতাদের চাপে সেখান থেকে লাশ তুলে নিয়ে বস্তাবন্দী করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে। এ ঘটনায় তোলপাড় এলাকাজুড়ে।

নিহত দুই শিশুরা হলেন- পাহাড়পুর গ্রামের রুবেল দাসের ছেলে সূর্য দাস (৬) ও মামুদপুর গ্রামের গোবিন্দ দাসের ছেলে প্রলয় দাস (৭)।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে পাহাড়পুর গ্রামে ফুটবল খেলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায় শিশু প্রলয় ও সূর্য। বিকেলে পাহাড়পুর শ্মশানে মাটি চাপা দিয়ে সমাহিত করা হয় তাদের। এতে বাধ সাধেন পঞ্চায়েত নেতারা। নির্দেশ দেন শ্মশান থেকে সরিয়ে নদীতে ভাসানোর। স্বজনরা বাধ্য হয়ে তাদের মরদেহ তুলে বস্তাবন্দী করে ভাসিয়ে দেয়া হয় কালনী-কুশিয়ারায়। এমন ঘটনায় বিস্মিত এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক বা শিশুদের লাশ দাহ না করে শ্মশানের পাশে সমাহিত করা হয়। রীতি অনুযায়ী ওই দিন সন্ধ্যায় দুই শিশুর লাশও গ্রামের শ্মশানঘাটে সমাহিত করা হয়। কিন্তু এতে পাহাড়পুর শ্মশানঘাট কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপেশ সরকার ও কোষাধ্যক্ষ অসীত চন্দ দাস ক্ষুব্ধ হন। তারা মৃত শিশুদের স্বজনদের কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চান। পরে লাশ দুটি তুলে গ্রামের অন্য শ্মশানঘাটে সমাহিত করার নির্দেশ দেন। বাধ্য হয়ে শিশুদের পরিবার লাশ দুটি তুলে ওই দিন রাতেই বস্তাবন্দী করে পাশের কুশিয়ারা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

পঞ্চায়েতের ১১ সদস্যই হর্তাকর্তা পাহাড়পুর গ্রামের। যাদের কাছে নেই জুতসই কোনো উত্তর। আর বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক।

Scroll to Top