লাশের পাশে চিরকুট, লেখা হত্যার কারণ

গাজীপুরের শ্রীপুরে ভাড়া বাসা থেকে মীম আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে উপজেলার মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদের ভবনের একটি ফ্ল্যাটের তালা খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এসময় লাশের পাশে একটি পাঁচ পৃষ্ঠার চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটের একটি অংশে লেখা ছিল ‘নিজে একাই মইরা যাইতাম, কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই এ আরো অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো তাই মাইরা ফেললাম।

স্বজনদের দাবি, চিঠিটি ওই গৃহবধূর স্বামী তার মায়ের উদ্দেশ্যে লিখেছেন। তবে পুলিশ বলছে, চিঠিটি ওই গৃহবধূর স্বামীর লেখা কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

নিহত গৃহবধূ মীম সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মূলকান্দি ছোটবেড়া খারুয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিনের (২৪) সঙ্গে ছয় মাস আগে তার বিয়ে হয়।

স্ত্রীকে নিয়ে আল আমিন আব্দুস সামাদের তিনতলা বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থেকে পাশের স্বাদ টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করতেন। ঘটনার পর থেকে আল আমিন পলাতক।

মীমের খালা সালমা আক্তার অভিযোগ করে জানান, মীমকে হত্যার পর ফ্ল্যাটের ভেতর মরদেহ রেখে বাহিরে তালা দিয়ে আল আমিন পালিয়ে যান। পরে আল আমিনের সহকর্মী আরিফকে দুপুরে ফোন করে বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি। লাশ ফ্ল্যাটের ভেতর রেখে বাহির থেকে লক করে রেখেছি।’

ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মো. মোস্তাকিম জানান, দুপুর ১টার দিকে আল আমিনের সহকর্মী আরিফ তার কাছে এসে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবেশীসহ পুলিশকে ঘটনাটি জানান।

খবর পেয়ে পুলিশ ফ্ল্যাটের তালা খুলে ভেতরে ঢুকে মেঝেতে মীমের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় মরদেহের পাশে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠি পড়ে ছিল।

মীম আক্তারের খালা সালমা আক্তার দাবি করেন, চিঠিটি আল আমিনের লেখা। মীমকে হত্যার পর আল আমিন তার মায়ের উদ্দেশ্যে ওই চিঠিটি লিখে রেখে গেছেন। চিঠির একটি অংশে লেখা, ‘মা, আমাকে মাফ কইরা দিও। অনেক স্বপ্ন ছিল, তোমারে কোনোদিন কষ্ট দিব না। কিন্তু এমন একজন মানুষ তুমি আমারে আইনা দিছো যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’

সালমা আক্তার জানান, ছয় মাস আগে পারিবারিকভাবে মীম-আল আমিনের বিয়ে হয়েছিল। মীম অনেক ভালো মেয়ে ছিল।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, ‘ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মীমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পরে মরদেহ ভেতরে রেখে বাহির থেকে লক করে আল আমিন পালিয়ে গেছেন।’

Scroll to Top