যশোরের মনিরামপুরে নিজ ঘরের ফ্যানে ঝুলছিলো কলেজছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম অরণ্য মণ্ডল (১৮)। তিনি উপজেলার পলাশী গ্রামের অশোক মণ্ডলের ছেলে। তার মা জ্যোসনা মণ্ডল স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অরণ্য বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। পলাশী আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রসেনজিৎ মণ্ডল জানান, লেখাপড়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে আছে।
এ দিকে আত্মহত্যার আগে অরণ্য নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘অতঃপর তুমি একদিন টের পাবে, আমাকেই তোমার দরকার ছিল সবচেয়ে বেশি! তুমি টের পাবে-আমার মতো ভালোবাসা কেউ দিতে পারে নাই তোমাকে! তুমি টের পাবে-এই মানুষটা থাকলে তোমার জীবনে অশান্তি আর থাকত না! তুমি বহু কিছু টের পাবে, আমার অনুপস্থিতি তোমাকে অনেক কিছু উপলব্ধি করাবে! তখন আমরা একসাথে আর থাকবো না। তুমি আমাকে আর পাবে না! আমি থেকে যাবো তোমার দীর্ঘনিশ্বাসে!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এইভাবে কি থাকার কথা ছিলো? ছিলো না তো! একটু তোমার সাথেই তো আজীবন থাকতে চেয়েছিলাম, রাখতে পারতে চাইলেই! তখন হয়তো এতো বুঝতে চাওনি, ব্যাপার নাহ! আমিও এখন বুঝি দাম দিতে গেলে নিজেরই দাম কমে যায়!’
এ বিষয়ে পলাশী আদর্শ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, অরণ্য আমাদের এলাকার ছোট ভাই। এক বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের এক মেয়ের সঙ্গে তার ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে প্রেম হয়। মেয়েটির সঙ্গে মাঝেমধ্যে মনোমালিন্য হলে, নিজের ফেসবুকে হতাশামূলক পোস্ট দিত। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমি তাকে ডেকে বুঝিয়েছি। মেয়েটির সঙ্গে অভিমানে অরণ্য আত্মহত্যা করতে পারে।
পলাশী-বাসুদেবপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, অরণ্য দুপুরের খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও সে ঘর থেকে বের হচ্ছিল না। এরপর পরিবারের লোকজন জানালা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে অরণ্যকে ফ্যানের সঙ্গে কাপড় জড়িয়ে ঝুলে থাকতে দেখে। তখন দ্রুত দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক অরণ্যকে মৃত ঘোষণা করেছেন।