গভীর রাতে সীমান্ত পেরিয়ে অবাধে বাংলাদেশে ঢুকছে মিয়ানমারের শত শত গরু-মহিষ। দেশটির চলমান সংঘাতের মধ্যেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া চোরাকারবারিরা। বাধা দিলে তারা বিজিবি সদস্যদের পর্যন্ত গুলি করছে।
স্থানীয়দের দাবি, চোরাকারবারের মূলহোতা কয়েকজন থাকলেও তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দুই শতাধিক সদস্য। তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানায়, এর লাগাম টানতে কাজ করছে চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্স। এদিকে মিয়ানমারের গরু আসায় বিপাকে দেশীয় খামারিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গভীর রাতে সড়কে সারি সারি গরু। পায়ে হেঁটে এসব গরু টানছেন চোরাকারবারিদের সদস্যরা। অনেকেই কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকেছেন। আবার কেউ হেঁটে যাচ্ছেন বীরদর্পে। ১০টি কিংবা ২০টি নয়; রয়েছে শত শত গরু। যা তুলে দেয়া হচ্ছে ট্রাকে। এভাবেই রাত যতই গভীর হয়, ততই সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে মিয়ানমারের গরু-মহিষ। তবে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ঢুকছে বহুগুণে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কালাচাইন্দা, বাম হাতিরছরা, ফুলতলী, ভালুখাইয়া পয়েন্টগুলোতে সক্রিয় চোরাকারবারিরা। যাদের হাতে রয়েছে অস্ত্র। মূলহোতা প্রভাবশালী কয়েকজন হলেও, তাদের নেতৃত্বে রয়েছে দুই শতাধিক সদস্য। যারা প্রতিদিনই শত শত মিয়ানমারের গরু-মহিষ ও ছাগল সীমান্ত দিয়ে অবাধে নিয়ে আসছে। আর মজুত করছে কক্সবাজারের ঈদগাঁও, ঈদগড় ও চকরিয়াতে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেট রয়েছে। তাদের কয়েকশ লোকও আছে। ওরা আবার অস্ত্রধারী। পাচারের সময় বিজিবি বাধা দিতে গেলে তাদেরও লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এভাবে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এদিকে মিয়ানমারের গরু আসায় বিপাকে দেশীয় খামারিরা। তাদের দাবি, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব পশু উঠছে হাট-বাজারে। আর সীমান্তে বিজিবিকেও গুলি করতেও প্রস্তুত চোরাকারবারিরা। কক্সবাজারের রামুর খামারি আব্দু রশীদ বলেন, ‘এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আমরা ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারছি না। সবকিছুর দাম বেশি। আমরা গরুও আনতে পারছি না। আর এভাবে চোরাই গরু আসায় সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।’
চোরাকারবারিদের লাগাম টানতে কাজ করছে চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্স- এমনটি জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন।তিনি বলেন, ‘বিজিবি চেষ্টা করছে চোরাকারবারিদের রুখতে। এর পাশাপাশি ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিরা সবাই আমাদের সহায়তা করছেন। আমরা সবাই মিলে চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্সের মাধ্যেমে এটা বন্ধ করতে চেষ্টা করছি।’ গেলো এক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আসা ৬২টি মহিষ জব্দ করেছে বিজিবি। যা নিলামে বিক্রি করা হবে।