কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেল লাইনের পাশ থেকে এক কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ সময় মরদেহের পাশ থেকে ‘প্রেমিকের’ফোন নম্বর, ঠিকানা, জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র ও কলেজের আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুর ময়নাতদন্ত শেষে ওই ছাত্রীর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মারা যাওয়া কলেজছাত্রীর নাম জান্নাত আক্তার। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে এবং চারগাছ নুরুল ইসলাম ভূইয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার ছাত্রী বলে জানা গেছে। কুমিল্লার রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় বিকেল থেকে মেয়েটি রেল লাইনে ঘোরাঘুরি করছিল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে দুই বাহু প্রসারিত করে ওই কলেজ ছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
স্থানীয় কামরুল হাসান বলেন, ‘মেয়েটি ট্রেনে ঝাঁপ দেওয়ার পর আমরা এসে দেখতে পাই দুটি নোটবুক রেললাইনের পাশে পাথর চাপা দিয়ে রাখা। এতে একটি ছেলের নাম লেখা- ‘হৃদয় মুন্সী. পিতা হোসেন মুন্সী, উপজেলা সাভার এবং তার ফোন নম্বর, ছবি, মেয়েটির জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র এবং কলেজের আইডি কার্ড। এখান থেকে হৃদয় মুন্সীর নাম্বারে ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে সে দুর্ব্যবহার করে ফোন কেটে দেয়। এরপর বিষয়টি বুড়িচং থানা পুলিশ এবং রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে রেলওয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।’
এদিকে জান্নাতের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন চাচাত ভাই রাজীব, ইয়াছিন ও আক্তার হোসেন। তারা বলেন, ‘সে কি কারণে আত্মহত্যা করল কিছুই বুঝতে পারছি না। তবে জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র যেহেতু সঙ্গে করে এনেছে- মনে হয় তাকে বিয়ে করার কথা বলে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে ওই ছেলে। তার কারণে যদি আমার বোন আত্মহত্যা করে থাকে আমরা তার বিচার দাবি করছি।’
কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি নিহত কলেজছাত্রীটি সকালে কোচিং করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে সদর রসুলপুর স্টেশন নেমে বুড়িচং মাধবপুর এসে পৌছায়। আমরা সকল আলামত জব্দ করেছি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশি তদন্ত অব্যবহৃত রয়েছে। এ আত্মহত্যার পেছনে যারই প্ররোচনা থাকে-দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’