কুড়িগ্রামে ৯টি রেলসেতু ও ১০ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৩৫ শতাংশ। অনিয়ম তদন্তে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে কুড়িগ্রামের উলিপুর রেলস্টেশন থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রেলপথের উন্নয়নে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়; যা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২৫ সালের জুনে।
রেললাইনের দুই পাশে মাটি ভরাট, ঝঁকিপূর্ণ স্থানে সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণ, ৯টি রেলসেতু সংস্কার, পাথর ফেলে কনক্রিটের স্লিপার বসানো ও নতুন লাইন স্থাপন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কন্সট্রাকশনের বিরুদ্ধে নিয়ম না মেনে ইচ্ছে মতো কাজের অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি রেল-নৌয়ের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ২০২৩ সালে কুড়িগ্রামের উলিপুর রেলস্টেশন থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশন পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রেলপথের উন্নয়নের কাজটি পায় বিশ্বাস কন্সট্রাকশন। এ কাজে মাটি ভরাট, রেললাইনের পাত ও স্লিপার বসানো ও পাথর ভরাটের কাজ আছে। এ কাজটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি।
তবে ২০২৪ সাল চলছে। এখন পর্যন্ত তারা শুধু মাটি ভরাটের কাজটি করেছে। আর এ মাটি ভরাটের কাজের মধ্যে আমরা দেখেছি তারা যে দূর থেকে মাটি আনছে তা নয়, তারা রেললাইনের নিচ থেকেই মাটি নিচ্ছে। এর তদন্তও চলছে। আর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে সবার মধ্যে সংশয় আছে।
এ দিকে, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে নানা মহল থেকে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তদন্ত শুরু করে দুদুক ও জেলা প্রশাসন। অনিয়ম পেলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। এ নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্ব কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। যাতে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ হয় তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবো। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে।
এ দিকে অনিয়মের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। আর রেলওয়ে বিভাগও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ।