বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া জামিন আদেশ তৈরির ঘটনায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে (৪৮) একবছরের জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ২৭ মার্চ জাহাঙ্গীর আলমের জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ওইদিন বলেছিলেন, বেশ কয়েক বছর আগে দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম উচ্চ আদালতের বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশ তৈরি করেছিলেন। দুদকের তদন্তেও তার জালিয়াতির ঘটনা প্রমাণিত হয়। এ কারণে তার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
গত ২১ মার্চ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে জামিন দেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
গত ৭ মার্চ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশ জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণ করলে ওই আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।
এ মামলার পলাতক অপর আসামিরা হলেন-পৌরসভার সচিব বগুড়া শহরের উত্তর জয়পুরপাড়ার রতন চন্দ্র দাসের ছেলে কার্তিক চন্দ্র দাস ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপ সুখানগাড়ি বম্বপাড়ার সোলাইমান আলীর ছেলে আবদুল মজিদ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দুপচাঁচিয়া পৌর মেয়র বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় সিও অফিস সড়কের আফতাব হোসেনের ছেলে। বেশ কয়েক বছর আগে দুর্নীতির অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি মূলে হাইকোর্টের ফৌজদারি মিস কেসের ভুয়া আদেশ সৃষ্টি করেন।
এরপর সেটি বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতে দাখিল করে ওই মামলার বিচার কার্যক্রম ১০ বছর স্থগিত করান। পরে হাইকোর্টের নম্বর রিট পিটিশন মামলার ২০২২ সালের ১৬ মার্চ রায়ের আলোকে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেলের আদেশে হাইকোর্টের রিট শাখার সুপারিন্টেনডেন্ট আবদুল মোমেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করেন।