আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে তাদের ভাতিজা নিশাদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং ২৯ মে অনুষ্ঠিতব্য কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন রোববার সন্ধায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
শাহাদাত হোসেনের দাবি, মেয়র আবদুল কাদের মির্জার প্রত্যক্ষ ইন্ধনে হেলমেট-হাতুড়ি বাহিনীর লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে তার ছেলে আসাদ হোসেন নিশাদের (২৫) ওপর হামলা চালায়।
বসুরহাট পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বড়রাজাপুরে নিজ নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার ছেলে আসাদ হোসেন নিশাদ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। সে কয়েক দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছে। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। শনিবার রাত ৯টায় আমার ছেলে বসুরহাট হাইস্কুল মাঠে তার বন্ধুদের সঙ্গে সময় দিচ্ছিল।
এ সময় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনীর ৮০-৯০ জন সন্ত্রাসী আমার ছেলে নিশাদকে মারধর করে। তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। উপস্থিত লোকজনের কারণে তা পারেনি। মেয়র মির্জা তাকে মেরে ফেলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমার ছেলেকে আঘাত করার পর ২ মিনিটের মধ্যে কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা কীভাবে সেখানে উপস্থিত হয়? মেয়রের ছেলে নিজেও তার বাবার যড়যন্ত্রের অংশীদার।
চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ, তাশিক মির্জা কালো রঙের একটি গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করে। গাড়িটিকে সে ‘টর্চারসেল’ বানিয়েছে। যারাই আমার টেলিফোন মার্কার ভোট করছে, তাদের ওই গাড়িতে উঠিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হাত-পা ভেঙে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ছেলেকে হত্যাচেষ্টার পর আমি নোয়াখালী ডিসির কাছে ফোন করেছি, তিনি ফোন ধরেননি। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির কাছে ফোন করেছি- ওসি বলেন— মামলা নিতে পারব না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমার ফোন ধরেন না। কাদের মির্জা ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রীকে তিন বছর আগে অনেক অপমান করেছেন। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সারা দেশে মানসম্মান নষ্ট করেছেন। আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। তিনি মন্ত্রীকে কন্ট্রোলে রেখেছেন। তার কথা না শুনলে লাইভে গিয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৫ ভাই। আমাদের ছোট ভাইকে (দেলোয়ার) কাদের মির্জা মেরে ফেলেছেন। ইচ্ছা করে মেরে ফেলেছেন। সে আবার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলে— মন্ত্রী নাকি আমার ছোট ভাইকে মেরে ফেলেছে। কোম্পানীগঞ্জে চোর, বাটপার ও রোহিঙ্গাদের আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। রোহিঙ্গা তানভীর, হামিদ, মোহনকেসহ নষ্ট চরিত্রের অনেককে কাদের মির্জা নেতা বানিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে শেষ করে দিয়েছে। প্রতিটি সেক্টরে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা চাঁদাবাজি করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার আকুল আবেদন— আপনি কোম্পানীগঞ্জের জনগণকে বাঁচান, আওয়ামী লীগকে বাঁচান। ভোটারদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করুন। নির্ভেজাল সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যারা কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে জনদুর্ভোগ বাড়াচ্ছেন তাদের হাত থেকে কোম্পানীগঞ্জের মানুষ মুক্তি চান।