বাংলাদেশের বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা সঙ্কটের ব্যাপারে প্রস্তুতকৃত এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এই সহায়তা চাওয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
প্রায় ৯৫ শতাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভর করে বলে গত বুধবার (১৩ মার্চ) জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের মুখে বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাত্মবোধ এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত বছরও জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার চেয়েছিল, যার মধ্যে কেবল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার তারা যোগাড় করতে পেরেছিল।
ইউএনএইচসিআর জানায়, রোহিঙ্গা সংকট এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু নয়। এমতাবস্থায় শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংকটের ফলাফল হবে খুবই সুদূরপ্রসারী। অধিকাংশ শরণার্থী তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে, এবং সহায়তা কার্যক্রম চলমান রাখা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, শরনার্থীদের ৭৫ শতাংশেরও বেশি হচ্ছে নারী ও শিশু, যারা নির্যাতন, বঞ্চনা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার হুমকির মুখে রয়েছে। শরণার্থীদের অর্ধেকেরও বেশির বয়স ১৮ এর নিচে, যারা শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবিকার সীমাবদ্ধতায় ভুগছে। সহায়তার অর্থ রোহিঙ্গাদের খাদ্য, চিকিৎসা, আবাসন, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হবে।
অনেক রোহিঙ্গাই ক্যাম্পের জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে উন্নত জীবনের লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এদিকে, রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও স্থবির হয়ে আছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের প্রধান ভলকার তুর্কের মতে, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে।