রাজশাহীর তানোরে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উপজেলা সদরের শহীর মিনারে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তালন্দ ইউনিয়নের বিলশহর গ্রামে মঙ্গলবার গভীর রাতে খুন হন ৩৬ বছর বয়সী জিয়াউর রহমান।
গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত জিয়াউর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের বিলশহর গ্রামের মহির আলি মন্ডলের ছেলে।
আজ বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে উপজেলার বিলশহর গ্রামের একটি সড়কে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে তানোর উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে নিজ মোটরসাইকেলে করে নিজ বাড়ি বিলশহর গ্রামের দিকে চলে যান জিয়াউর। বুধবার ভোরে পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে লোকজন সড়কের পাশে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। সকাল ৮টায় তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউর রাজশাহী-১ ( গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীর চাচাত ভাই।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান মেম্বারের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। নিহত জিয়াউর ছিলেন বাবু চেয়ারম্যানের পক্ষের লোক। গত সংসদ নির্বাচনে বাবু চেয়ারম্যানসহ তার পক্ষের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। গত ৭ জানুয়ারি ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরদিন এলাকার সংসদ সদস্য (এমপি) ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হাসান মেম্বারের নির্দেশে জিয়াউরের একটি গভীর নলকূপে তালা মেরে দেন। গত কয়েকদিন আগে জিয়াউরের একটি কাঁচামালের গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। জিয়াউরকে এলাকা ত্যাগের জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল হাসান মেম্বারের লোকজন।
এলাকাবাসী আরও জানান, গত কিছুদিন ধরে হাসান মেম্বারের সশস্ত্র ক্যাডার ফরহাদ, শাওন, মিঠু ও হাসান মেম্বারের ভাই হাকিম বাবুসহ ক্যাডাররা নিহত জিয়াউরকে নারায়ণপুর বাজার মোড়ে ঘেরাও করেছিল। কিন্তু জিয়াউর দ্রুত মোটরসাইকেলে চড়ে স্থান ত্যাগ করায় ওই দিন প্রাণে বেঁচে যান।
তানোর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।