রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নতুন করে বেড়েছে। খুচরায় গত সপ্তাহে মানভেদে মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। ফার্মের ডিম ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।
কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি মানভেদে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ভরা মৌসুমেও সব ধরনের শাক-সবজি চড়া। খুচরা বাজারে ৮০ টাকা কেজির নিচে বেগুন নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মহাখালী কাঁচাবাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল খুচরায় বড় সাইজের প্রতি কেজি মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। দাম কিছুটা কমে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা ছিল ২০০ টাকা।
সোনালি মুরগি মানভেদে কেজি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা।
বাজারে নতুন রসুনের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে পুরনো দেশি রসুন কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে দেশি নতুন রসুন কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
প্যাকেটজাত চিনি কেজি ১৪৮ টাকা ও খোলা চিনি কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে গতকাল রাজধানীর শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আমদানিকারক মো. আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘কিছুদিন আগে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে যাওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ ঠিকমতো তুলছিলেন না। এতে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়। মূলত এ কারণেই দাম বেড়েছে। বাড়তি দামের আশায় কৃষকরা এখন আবার পেঁয়াজ তুলে বাজারজাত করছেন। এতে দাম কিছুটা কমতির দিকে। সাধারণত বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেই দাম কম থাকে।’
মো. আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘ভারতে এখন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা। এখন আমদানি করা গেলে দেশের বাজারে ভোক্তারা ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে পারত। দেশে যেহেতু চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে, তাই এখন থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দেওয়া উচিত। তাহলে বাজারে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা যাবে।’
মহাখালী কাঁচাবাজারের পাইকারি ও খুচরা ডিম বিক্রেতা মো. রাজিব মিয়া রাজু গতকাল বলেন, ‘বাজারে এখন ডিমের সরবরাহ খুব কম। এতে এক সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে।’
বাড্ডার মুরগি বিক্রেতা মো. আরিফ বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি করা হয়।’
রামপুরা কাঁচাবাজারের জিহাদ ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মো. বায়েজিদ বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম না বাড়লেও কমেনি। আগের বাড়তি দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে।’
সবজির সরবরাহ ভালো, দাম চড়া
বাজারে এখনো সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর পরও সব ধরনের শাক-সবজির দাম চড়া। রাজধানীর খুচরা বাজারে ভালো মানের বেগুন ৮০ টাকা কেজির নিচে কেনা যাচ্ছে না। মুলা ও পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, শিম মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, লম্বা লাউ আকারভেদে প্রতিটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও আলু কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি।