গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এ হরতাল ডাকা হয়। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেফতার সব নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে হরতাল শুরু হয়।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালে রাজধানীতে অন্যান্য দিনের তুলনায় যানবাহন চলাচল অনেক কম। পাশাপাশি যাত্রী সংখ্যাও কম গণপরিবহনগুলোতে। কিছু গাড়ি আসলেও যাত্রীর অভাবে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে মোড়ে মোড়ে।
আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়সহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।পরিবহন চালকরা বলছেন, রাস্তায় গাড়ি চালানো অনেক ঝুঁকি থাকলেও জীবিকার তাগিদে তারা বের হয়েছেন। তবে যাত্রী না পেয়ে অনেকটাই হতাশ হচ্ছেন তারা।
বনানী অফিসগামী তানভীর নাইম বলেন, রাস্তায় গাড়ি অনেক কম। অনেক অপেক্ষা করে কাজলা থেকে গুলিস্তান এসেছি। এখন গুলিস্তান থেকে বাসে বনানী যাবো। তবে রাস্তায় মানুষের সংখ্যাও কম। কোনো যানজটও নেই।
গুলশানগামী মাহমুদুল হাসান বলেন, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম। আর বাসে আগুনের ঝুঁকি। তাই সিএনজি নিয়েছি, তবে ভাড়া একটু কমই। অন্যদিন ভাড়া সাড়ে তিনশ থেকে চারশ হলেও আজ যাত্রী কম থাকায় ভাড়া তিনশ টাকা নিচ্ছে। তবে সেটাও আমাদের জন্য বাড়তি খরচ। আমাদের মতো কর্মজীবিদের সবসময়ই দুর্ভোগ। হরতাল-অবরোধে একদিকে যেমন জীবনের ঝুঁকি অন্যদিকে বাড়তি খরচের চাপও পড়ে।
বিআরটিসি বাসের হেলপার সুমন মিয়া বলেন, হরতালে অনেক ঝুঁকি নিয়া গাড়ি বাইর করছি। কিন্তু যাত্রী তো পাই না। এতো ঝুঁকি নিয়া লাভ কি যদি রাস্তায় যাত্রীই না থাকে। গতকালকে রাতেও গুলিস্তান ফ্লাইওভারে গাড়িতে আগুন দিছে। আমগো তো কোনো নিরাপত্তা নাই। আবার দিনশেষ গাড়ির খরচটাও ওঠে না।
সাইনবোর্ড থেকে গুলিস্তানগামী শ্রাবণ বাসের চালক মনির হোসেন বলেন, ঝামেলার মধ্যেও গাড়ি নিয়া বাইর হইছি। কিন্তু মানুষ তো কম রাস্তায়। গাড়ি ভরতাছে না, তাউ খাড়ায়া রইছি। অন্য সময় তো পাঁচ মিনিটে গাড়ি ভইরা যায়। আর গাড়ি চালানোর সময় চিন্তায় থাকন লাগে কহন কে আগুন লাগায়ে দেয়।