‘মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চলছে’

শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি বলেছেন, ‘শ্রমিকবান্ধব দাবিদার বর্তমান সরকার মজুরি ঘোষণার প্রশ্নে মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মজুরি ঘোষণায় টালবাহনা করে দেরি এবং অন্যায়ভাবে ১০ হাজার ৪০০ টাকা মজুরি প্রস্তাব করে মালিকেরা শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে উসকানি দিয়েছে। শ্রমিকরা রাস্তায় নামায় সরকার তাদের গুলি করে হত্যা করেছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাসদ ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার ইনচার্জ নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন প্রমুখ।

সমাবেশে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে গার্মেন্টস শ্রমিক রাসেল, আঞ্জুয়ারা, জালালুদ্দিন ও ইমরান হত্যার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পরিবারপ্রতি আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান, শ্রমিকদের ওপর হামলা-মামলা-হয়রানি বন্ধ, শ্রম আইনের শ্রমিকবিরোধী ১৩(১) ধারার ব্যবহার বন্ধ এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত অগ্রহণযোগ্য ও ত্রুটিপূর্ণ মজুরি কাঠামো বাতিল করে তা পুনর্নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্দোলনের একপর্যায়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করা হয়, যেটি শ্রমিকদের প্রত্যাশিত নয়।

বাজারদর, উচ্চ দ্রব্যমূল্য, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় শ্রমিকরা ২৩ হাজার টাকা মজুরি দাবি করেছিল। এই অযৌক্তিক সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা শ্রমিকদের আরো ক্ষুব্ধ করেছে। শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। রাসেল, ইমরান, আঞ্জুয়ারা, জালাল নামের চারজন শ্রমিককে হত্যা করেছে।

যেসব ভাঙচুরের কথা শ্রমিকরা করেছে বলে বলা হচ্ছে, সেটিও সঠিক নয়। সরকারি দলের গুণ্ডা, ঝুট ব্যবসায়ী ও মালিকদের লাঠিয়াল বাহিনী ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে শ্রমিকদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। বাস্তবে মজুরি পুনর্নির্ধারণের দাবিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ সকল ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। অবিলম্বে দমন-পীড়ন বন্ধ, শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া শ্রমিকদের ওপর দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সেগুনবাগিচাস্থ দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

Scroll to Top