দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি আন্দামান সাগরে অবস্থানরত সুষ্পষ্ট লঘুচাপটি মঙ্গলবার মধ্যেই নিম্নচাপ ও বুধবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
সেটি হলে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘মোখা’। তবে মোখার সম্ভাব্য গতিপথ এখনো স্পষ্ট নয়। আবহাওয়া অফিস বলছে, সঠিক গতি-প্রকৃতি জানতে আরও সময় লাগবে।
এদিকে, সারাদেশে চলমান তীব্র গরম আরও দু’দিন চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস উঠেছে জনজীবনে।
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন আন্দামান সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সোমবার মধ্যরাতেই সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন গাণিতিক মডেল পর্যালোচনা করে আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবারের মধ্যেই এটি নিম্নচাপে রূপ নেবে।
এর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বুধবারের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘুর্ণিঝড় হলে এর নাম হবে ‘মোখা’। তবে সম্ভাব্য এই ঘূণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি এখনও স্পষ্ট নয়।
আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে।
এরপর ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে বাঁক নিতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে তার ল্যান্ডফল (যেখানে ঝড় আছড়ে পড়ে) কোথায় হবে, তা এখনই জানা যায়নি। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই এই ব্যাপারে হিসাব মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে মে মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়। আবহাওয়ার তথ্য বলছে, ১৯৬০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৬টি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছে।
যার ১৫ টাই এসেছে মে মাসে। তাই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ থেকে বাংলাদেশ উপকূল শংকামুক্ত নয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বঙ্গোপসাগরে যখন দানা বাঁধছে ঘূর্ণিঝড়, তখন গরমে পুড়ছে পুরো দেশ। রাজশাহী বিভাগের বেশিরভাগ জেলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ।
রাজধানী ঢাকায়ও প্রচন্ড গরম। জনজীবনে নাভিশ্বাস অবস্থা। পূর্বাভাস বলছে, আগামী আরও দু’তিন দিন এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এই সময়ের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনাও কম।