কুমিল্লার হোমনার ইকবাল তিতির পাখি পালনে স্বাবলম্বী

বাণিজ্যিকভাবে তিতির পাখি পালন করে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের চুনারচর গ্রামের যুবক ইকবাল হোসেন ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। এ তিতির পালন করে তার ভাগ্যের চাকাও ঘুরেছে। মৃত্যুঝুঁকি কম থাকা ও ব্রয়লার মুরগি পালনের চেয়ে খরচ কম পড়ায় তিতির পালনে আমিষের অভাব পূরণের পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে বলে মনে করেন ইকবাল হোসেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, শোভাবর্ধনকারী পাখিগুলোর মধ্যে তিতির অন্যতম। তিতির পালনে খাদ্য ও উৎপাদন খরচ কম। তাই তিতির পালন লাভজনক। তিতিরের মাংস ও ডিম সুস্বাদু। তিতির খুব শান্ত হওয়ায় তিতির পালন খুব সহজ। গ্রামীণ পরিবেশেই হাঁস-মুরগির সঙ্গে পালন করা যায়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রজাতির তিতির রয়েছে। বাংলাদেশে আছে সাধারণ তিতির ও কালো তিতির। ডিমের রঙ ঘন বাদামি, ছোট ছোট দাগ থাকে, লাটিম আকৃতির ও ওজন ৩৮-৪৪ গ্রাম। পুরুষ তিতির মাথার মুকুট স্ত্রীর চেয়ে বড়। পায়ের রঙ কালচে। পূর্ণাঙ্গ পুরুষের ওজন ১.৫-২ কেজি, স্ত্রীর ওজন ১-১.৫ কেজি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। প্রাকৃতিক খাদ্য খায় বলে খরচ কম। উন্নতমানের ঘর দরকার হয় না। ৬-৭ মাস বয়সে ডিম পাড়ে। বছরে ১০০-১২০টি ডিম দেয়। ৫-৬ মাসে খাওয়া ও বিক্রির উপযোগী হয়। দেশি মুরগির সঙ্গে একত্রে পালন করা যায়। ডিম প্রাকৃতিক ও কৃত্রিমভাবে ফুটানো যায়। ডিম ফুটতে ২৭-২৮ দিন সময় লাগে। ডিম দেশি মুরগি দিয়েও ফুটানো যায়। প্রজনন মৌসুম মার্চ-অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তিতির খোলামেলা পরিবেশে ও আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায়।

উদ্যোক্তা ইকবাল হোসেন দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাকে জানান ২০২১ সালে একজোড়া পাখি এনে আর কিছু ডিম ক্রয় করে তা নিজ খামারে বাচ্চা ফুটিয়ে লালন পালন শুরু করেন। অনেকে তিতির খাওয়ার জন্য কেনেন। মাংসের স্বাদ ভালো ও শৌখিন মানুষজন পালন করে থাকেন। প্রতি জোড়া দুই থেকে তিন হাজার টাকা। তার খামারে বর্তমানে দুইশত\’র বেশি তিতির পাখি রয়েছে বর্তমানে ডিমও দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে তিতি পাখি পালন অন্যান্য দেশের তুলনায় সহজ। তিতির খাবারের জন্য কোনো সমস্যা হয় না। গম ধান দানাদার থেকে কলমির শাক বাঁধাকপি বেশি পছন্দ করে এবং মাংস উৎপাদনের জন্য দানাদার খাবার দিতে হয়।

এদিকে উপজেলা ভেটেনারি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিনের পরামর্শ নিয়ে তিনি এই খামার পরিচর্যা করছেন। উপজেলা ভেটেনারি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিন ওই পত্রিকাকে বলেন, মুরগির চেয়ে এর রোগবালাই কম হয়, ডিম বেশি পাড়ে, ওজন বেশি হয়, উৎপাদন খরচ কম ও দেখতে সুন্দর। এজন্য তিতির পালন করা লাভজনক। হোমনায় তিতির খামারটি উপজেলার দ্বিতীয় বড় খামার। তিতির পালন করে তরুণরা বেকারত্ব দূর করতে পারে।

সংবাদ সূত্রঃ বাসস

Scroll to Top