সফল নারীদের নিয়ে গড়ে ওঠে অনেক কল্পকাহিনি। অথচ তাঁদের চলার পথ কখনোই সহজ হয় না। অন্যদের তুলনায় খাটতে হয় দ্বিগুণ-তিনগুণ। এই পুরো যাত্রায় নারীদের কাছের সঙ্গী হিসেবে ভূমিকা পালন করে হাতের ব্যাগটি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লম্বা সময় যখন বাইরে থাকতে হয়, হাতের ব্যাগটির মধ্যেই থাকে সারা দিনের সব জিনিস। আবার যখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছেন কর্মজীবনে, তখন হাতব্যাগটি হয়তো বদলে যায়। ভেতরের জিনিসগুলো কিন্তু কমবেশি একই থাকে। ২০১১ সালে হার্পাস বাজার ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হিলারি ক্লিনটন জানিয়েছিলেন, তিনি ভালো হাতব্যাগ পছন্দ করেন। এটি অনেকটা গভীর মনস্তাত্ত্বিক প্রয়োজনীয়তার মতো। প্রতিদিনের জীবনকে সংগঠিত ও ধারণ দুটোই করা যায়, যদি হাতের ব্যাগটি ভালো হয়।
খুব সাধারণ জিনিস যেমন মুঠোফোন, চার্জার, চাবি, টাকার ব্যাগ থেকে শুরু করে বেশ মজার মজার জিনিসও বের হয়ে আসে নারীদের ব্যাগ থেকে। জেন–জিদের ব্যাগ থেকে তো সনি অ্যাঞ্জেলস পুতুলও বের হয়ে আসে। নারী যদি মা হয়ে থাকেন, তাঁর ব্যাগ থেকে শিশুদের কোনো না কোনো জিনিস বের হয়ে আসবে। ভারতীয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের ব্যাগে যেমন থাকে রাহার জন্য রুমাল, হাতমোজা। আবার অভিনেত্রী এমা ওয়াটসনের ব্যাগ থেকে অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে বের হয়েছে গরম পানির ব্যাগ। ভিক্টোরিয়া বেকহামের ব্যাগে সব সময় থাকে স্ফটিক পাথর (ক্রিস্টেল)। নিজেদের বিশ্বাস আর জীবনধারার সঙ্গে মিলিয়ে সফল নারীদের ব্যাগে কিছু না কিছু ব্যতিক্রম জিনিস থাকবেই। তবে বেশ কিছু অনুষঙ্গ ঘুরেফিরে সবার ব্যাগেই দেখা গেছে।
স্ক্রানচি
চুল বাঁধার স্ক্রানচি (রাউন্ড ব্যান্ড) ব্যাগে রাখেন অনেকেই। রাবার ব্যান্ডের বদলে স্ক্রানচি বেছে নেওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। দেখতে অভিজাত। চুলের জন্যও ভালো। এমা ওয়াটসন তো চামড়ার স্ক্রানচি ব্যবহার করেন।
নোটবুক
ছোট একটা নোটবুক, কলম বা পেনসিল থাকবেই ব্যাগে। সময়ে–অসময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে ফেলতে বা ড্রয়িং করতে পছন্দ করেন অনেকেই।
বই
সফল যাঁরা, তাঁরা পড়তে ভালোবাসেন। বই থাকবেই তাঁদের সঙ্গে। কেউ হয়তো কিন্ডেলে ডুবে থাকেন, কেউ আবার পাতা উল্টিয়ে পড়তেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
স্ন্যাকস
বাড়ি থেকে বের হলে কখন ফিরবেন, তাঁর থাকে না কোনো ঠিকঠিকানা। সে কারণে নারীরা সঙ্গে রাখেন স্ন্যাকস। বাদাম, বিস্কুট, প্রোটিনবার ইত্যাদি জিনিস বহন করতে পছন্দ করেন নারীরা।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ওয়েট ওয়াইপস
করোনার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না কারও। করোনার পর এই জিনিস এখন নারীদের ব্যাগে থাকবেই। সারা দিন অনেকের সঙ্গে দেখা করা, হাত মেলানো, বাইরে খাওয়ার মতো কাজগুলো করতে হয়। এ কারণে ওয়াইপস আর হ্যান্ড সানিটাইজার বহন করা অনেকটাই যেন আবশ্যক।
সানগ্লাস আর সানস্ক্রিন
রোদ থেকে ত্বক আর চোখ বাঁচাতে এ দুটো জিনিস খুঁজে পাওয়া যাবে সফল নারীদের ব্যাগে। ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন মজা করে বলেন, কখনো যদি মেকআপ না থাকে বা চেহারায় ক্লান্ত ভাব থাকে, তিনি রোদচশমা দিয়ে চোখ ঢেকে নেন।
কার্ড
নিজের বিজনেস কার্ড, এটিএম কার্ডগুলো সঙ্গে থাকবেই।
সতেজ থাকার অনুষঙ্গ
পারফিউম, ডিওডোরেন্ট, ক্রিম, লিপবাম, লিপস্টিক, ফেইস মিস্ট, মাউথ ফ্রেশনার, মেকআপ রিমুভার, হেয়ার ব্রাশ, ডেন্টাল ফ্লস ব্যাগে থাকা উচিত বলে মনে করেন সফল নারীরা। দিনের যেকোনো সময় এগুলোর প্রয়োজন হতে পারে। শরীরে ও মুখে দুর্গন্ধ নিয়ে ঘুরতে নারাজ তাঁরা। এতে করে মানুষের সঙ্গে কথা বলা বা কাছাকাছি গেলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হবে না। অনেকে আবার ব্যাগের ভেতর আই মাস্ক রাখেন। ঘুম পেলে চোখ ঢেকে ঘুমিয়ে নেন কিছুক্ষণের জন্য।
প্রয়োজনীয়
বাড়ির চাবি, মুঠোফোন, ফোনের চার্জার, প্রয়োজনীয় ওষুধ ইত্যাদি হাতের একদম কাছে রাখতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন নারীরা।