বাংলাদেশের খাল–বিল, নদী–নালায় রোজ তৈরি হয় কত গল্প। কিন্তু কয়জন জানে, সন্ত্রাসপূর্ণ রক্তাক্ত ইতিহাসের এক অধ্যায় থেকে উঠে এসেছিল অনবদ্য একটি পদ? খাবারটির নাম চিকেন কান্ট্রি ক্যাপ্টেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে তাঁর হীরকজয়ন্তী বর্ষে এই পদটি পরিবেশন করেছিলেন প্রখ্যাত শেফ সাইরাস টোডিওয়ালা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিখ্যাত মার্কিন সেনানায়ক জর্জ এস প্যাটনেরও এটি পছন্দের পদ। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ মার্কিন মুলুকে অতি জনপ্রিয় রান্না। পৃথিবীকে এই রান্না অ্যাংলো–ইন্ডিয়ানদের উপহার। পর্তুগিজদের ছোট জাহাজে এই রান্না করতেন বন্দী মগরা। জাহাজের ক্যাপ্টেনদের জন্য পদটি রান্না হতো, তাই নাম চিকেন কান্ট্রি ক্যাপ্টেন।
উপকরণ: মুরগির রান ও বুকের মাংস ১ কেজি, আলু লম্বা ফালি করে কাটা ২টি, বাঁধাকপিকুচি ৫০০ গ্রাম, ডিম ২টি, পেঁয়াজকুচি ৭টি, নারকেল কোরা ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ৭টি, শর্ষেদানা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা সাড়ে তিন চা–চামচ, আদাবাটা আড়াই চা–চামচ, কালো গোলমরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, লবণ ও তেল প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: কড়াইয়ে তেল গরম করে শর্ষেদানা দিন। সুগন্ধ বের হলে তাতে অর্ধেক পেঁয়াজকুচি ও ২–৩টি কাঁচা মরিচ দিন। পেঁয়াজে রং এলে তাতে ১ চামচ আদা ও রসুনবাটা দিয়ে কষাতে হবে। কিছুক্ষণ পর এতে অল্প অল্প করে বাঁধাকপি মেশাতে হবে। প্রথমে একটু দিয়ে রান্নায় মেশানোর পর আবার একটু দিতে হবে। শেষবারে বাঁধাকপির সঙ্গে লবণ আর কোরানো নারকেল দিন। এই তৈরি হলো ফুগাট।
বাকি পেঁয়াজটুকু দিয়ে এবার বেরেস্তা করে নিন। তারপর কড়াইয়ে আবার কিছুটা তেল আর ঘি দিতে হবে। গরম হলে এতে দেড় চামচ আদাবাটা ও আড়াই চামচ রসুনবাটা দিয়ে কাঁচা গন্ধ চলে না যাওয়া পর্যন্ত ভালো করে নাড়তে হবে। এবার কড়াইয়ে কয়েকটি মরিচ আর মাংস দিয়ে হালকা ভেজে নিন। মাংসে হালকা বাদামি রং চলে এলে গোলমরিচ আর লবণ দিন। মাংস প্রায় হয়ে গেলে ২ কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে ঢেকে সেদ্ধ করতে হবে। ঝোল কমে এলে ঢাকনা খুলে দিন। মাখো মাখো ঝোল হওয়া পর্যন্ত পানি শুকিয়ে নিন।
আরেকটা কড়াইয়ে পানি আর লবণ দিয়ে কেটে রাখা আলু আধা সেদ্ধ করুন। তারপর পানি থেকে তুলে ঠান্ডা করে তেলে ভাজুন। চিকেন কান্ট্রি ক্যাপ্টেনকে একটা মিল বলা যায়। মুরগির ওপর বেরেস্তা দিয়ে পাশে আলুভাজা, পাউরুটি, ডিম সেদ্ধ আর ফুগাট দিয়ে পরিবেশন করুন।