গরমে ঘাম হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে প্রায়ই যদি আপনার হাত পা ঘেমে যাওয়ার সমস্যা তীব্র হয়ে ওঠে কিংবা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তবে তা মোটেও ভালো কোনো ইঙ্গিত নয়।
এমন অনেকেই আছেন যারা অতিরিক্ত হাত ঘেমে যাওয়ার কারণে মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা যে কোনো বস্তু বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেন না। সেন্সর মেশিনে আঙুলের ছাপ দিতে ব্যর্থ হন অতিরিক্ত ঘামের জন্য।
যদি আপনার প্রায়ই এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় তাহলে একটু খেয়াল করে দেখুন হাত বেশি ঘামার কারণে আপনার লিখতে অসুবিধা হচ্ছে কিনা, অতিরিক্ত ঘামে জামা বিশেষ করে বগলের নিচে ভিজেছে কিনা কিংবা লক্ষ্য করুন পা বেশি ঘামার কারণে মোজা খুব তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যাচ্ছে কি না।
এসব লক্ষণ যদি আপনার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে তবে দেরি না করে খুব দ্রুত একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিন।
এ প্রসঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান ডাক্তার রাশেদ খান দিয়েছেন বিশেষ পরামর্শ। আসুন তা একে একে জেনে নিই-
হাত-পা ঘামার কারণ
ডাক্তার রাশেদ খান বলেন, হাত-পা ঘামার প্রাথমিক কারণ হিসেবে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত স্নায়বিক উত্তেজনার কারণে ঘাম হয়ে থাকে। এছাড়া আরও নানা কারণে হাত-পা ঘেমে থাকে। যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, থাইরয়েডে সমস্যা, ডায়াবেটিস, জ্বর, শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা, মেনোপোজের পর প্রভৃতি। অনেক সময় শরীরে ভিটামিনের অভাব থাকলে হাত-পা অতিরিক্ত ঘামতে পারে। আবার মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও জেনেটিক কারণে হাত-পা ঘামার সমস্যা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
চিকিৎসা
হাত-পা ঘামার সঠিক কারণ বের না করে চিকিৎসা করা উচিত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগে অনুসন্ধান বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারণ খুঁজতে হবে। তারপর সঠিক চিকিৎসা নিলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ বলে মনে করেন ডাক্তার রাশেদ খান।
তার মতে, সাধারণত বিভিন্নভাবে হাত-পা ঘামা কমানো যেতে পারে। অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত এক ধরনের বিশেষ লোশন হাত-পায়ে ব্যবহার করলে হাত-পা ঘামা কমে যায়। বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রে হাত-পা সেকে নিলে হাত-পা ঘামা কমে যাবে। পরবর্তী সময়ে এটি দেখা দিলে আবার একইভাবে সেই বৈদ্যুতিক যন্ত্রে হাত-পা সেকে নিতে হবে। এসব পদ্ধতি ছাড়াও একটি বিশেষ ধরনের নার্ভের অস্ত্রোপচার করেও হাত-পা ঘামা কমানো যায়।