শিশুর প্রথম ছয় মাস তো মোটামুটি দুধের ওপর দিয়েই কেটে যায়। এর মধ্যেই এসে পড়ে মুখে ভাতের অনুষ্ঠান।
নিচের পাটিতে খুদে খুদে দুটো দাঁত উঠলেই বাড়িতে সাড়া পড়ে যায়। যেন এখনই ছোট মানুষটি সবকিছু খাওয়ার জন্য প্রস্তুত!
এছাড়া যার দাঁত উঠতে দেরি হয় তার বাবা-মায়ের চিন্তার অন্ত নেই। কেন এখনও উঠছে না? কোনো সমস্যা নেইতো?
সত্যিই শিশুর প্রথম দাঁত ওঠা একটা বড় ব্যাপার। তাই আজ থাকছে প্রথম দাঁত ও যত্ন নিয়ে কিছু কথা।
শিশুদের ছয় মাস থেকে নয় মাসের মধ্যে দাঁত ওঠে। কোনো কোনো শিশুর তার আগে ওঠে আবার কারো কারো এক বছরও সময় লেগে যায়। দুই-এক মাসের পার্থক্য নিয়ে খুব একটা চিন্তার কিছু নেই। তবে বেশি চিন্তা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলবেন।
সাধারণত দুধের দাঁত জোড়ায় জোড়ায় বের হয়। দুই-তিন বছরের মধ্যে শিশুর সব দাঁতই উঠে যায়।
দাঁত ওঠার সময় শিশুর মাড়িতে সামান্য ব্যথা হতে পারে। সব শিশুর ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা এক নয়। তাই একেকজনের ক্ষেত্রে দাঁত ওঠার লক্ষণ একেক ধরনের।
এই সময়ে মুখ দিয়ে বেশি লালা ঝরে। পাতলা সুতির বিব দিয়ে মাঝে মাঝে মুছিয়ে দিতে হবে। এ সময়ে বিরক্তি ও ঘ্যানঘ্যানেভাবও থাকতে পারে। খাওয়াতেও অনীহা দেখা দেয়। এগুলো আবার নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে জ্বর বা ডায়েরিয়া হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
দাঁত ওঠার আগে ও পরে শিশুর মধ্যে সবকিছু কামড়ে দেখার প্রবণতা দেখা দেয়। এই সময়ে ওকে একটু সাবধানে রাখা দরকার যাতে ও যা খুশি তাই মুখে না দিতে পারে। ওর জন্য নন টক্সিক মেটেরিয়ালের তৈরি টিদার কিনতে পারেন। অনেক টিদারের ভেতরে লিকুইড ভরা থাকে, এগুলো কিছু সময় ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা হলে শিশুকে দিন। ঠাণ্ডা স্থানে কামড় বসালে শিশুর আরাম লাগবে।
কয়েকটা দাঁত উঠে গেলে আপনি নিজেই ওর দাঁত পরিষ্কার করে দিতে পারেন। তর্জনিতে ভালো করে পরিষ্কার গজ কাপড় পেঁচিয়ে ওর দাঁত পরিষ্কার করে দেবেন। অথবা আঙুলে পরে নেওয়া যায় এমন প্লাস্টিক কভারিং এবং ব্রিসল দেওয়া ফিংগার ব্রাশও পাওয়া যায়। যা আপনি নিজে আঙুলে পরে ওর দাঁত পরিষ্কার করে দিতে পারবেন। দেড় বছর বয়স থেকে ওকে বেবি টুথপেস্ট এবং ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করা শেখান।
শিশুকে মিষ্টি, চকলেট কম খাওয়ান। রাতে শুতে যাওয়ার আগে তো একেবারেই নয়। রাতে শুয়ে ফিডারে দুধ খেলেও কিন্তু ক্যাভিটি দেখা দিতে পারে। সেদিকে খেয়াল রাখুন।