লিভার শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এটি মূলত শরীরে জমে থাকা টক্সিনগুলিকে বের করে দিতে সহায়তা করে। কিন্তু লিভারের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে টক্সিন শরীরেই থেকে যাবে। আর শরীরের একের পর এক সমস্যা দেখা দেবে।
প্রতিদিনের কিছু বদভ্যাসই লিভারের ক্ষতি হওয়ার মূল কারণ। ফলে লিভারের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ ব্যহত হয়। তাই শরীর সুস্থ রাখতে লিভারের যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিনের কিছু বদভ্যাস অবশ্যই ত্যাগ করা উচিত। এমন কিছু বদভ্যাসের কথা জানিয়েছে লাইফস্টাইল বিষয়ক এক ওয়েবসাইট।
১. মদ্যপান : অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপান করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত অ্যালকোহলের গ্রহণ লিভারের টক্সিন বের করার ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। যার ফলস্বরূপ লিভারে প্রদাহ এবং ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
২. অতিমাত্রায় ওষুধ গ্রহণ : অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ গ্রহণ লিভারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমনকি লিভার ফেলিওরের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যথা কমানোর ওষুধ খেলে লিভারের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে।
৩. ধূমপান : মদ্যপানের মত ধূমপানেও লিভারের ক্ষতি হয়। বিড়ি সিগারেটে উপস্থিত রাসায়নিকগুলো লিভারে পৌঁছায় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে এবং এর ফলে তৈরি হওয়া ফ্রী র্যাডিকেলস লিভারের কোষগুলোর ব্যাপক ক্ষতি করে। এর ফলে ফাইব্রোসিসও হয়।
৪. অস্বাস্থ্যকর ডায়েট : প্রক্রিয়াজাত খাবারে অ্যাডিটিভ ও কৃত্রিম মিষ্টি থাকে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার, প্রসেসড ফুড, ফ্যাটি ফুড লিভারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবারের পরিবর্তে খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলো বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের উৎস। এগুলো লিভারকে সুস্থ রাখে। তাছাড়া, অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা খাবার-দাবার খাওয়ার অভ্যাসও লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর!
৫. পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া : পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব লিভারে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে, যা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই লিভারের যত্ন নিতে রোজ অন্ততপক্ষে টানা ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৬. সকালে খালি পেটে থাকা : সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেই দীর্ঘসময় পর্যন্ত খালি পেটে থাকেন। এই অভ্যাস কিন্তু লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে যদি এই রকম অনিয়ম চলে, তাহলে লিভারের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।
৭. অতিরিক্ত নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ : অতিরিক্ত মাত্রায় নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট এবং নির্দিষ্ট ভেষজ গ্রহণ করাও কিন্তু লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিশেষ করে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন এ গ্রহণ লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
৮. দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং ওঠা : দেরি করে ঘুমাতে যাওয়া এবং দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা – উভয়ই লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই অভ্যাসের ফলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়, পাশাপাশি শরীরের আরও একাধিক সমস্যা হয়। আর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে লিভারের উপরে।
৯. সকালের নিত্য ক্রিয়া চেপে রাখা : অনেকেই সকালে মল-মূত্র চেপে শুয়ে থাকেন কিংবা ঘুম থেকে ওঠার পরও আলস্য করে সকালের নিত্য ক্রিয়া চেপে রাখেন। এই অভ্যাসও কিন্তু লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন যদি এই রকম অনিয়ম চলতে থাকে, তাহলে লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়।