যারা তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে

যারা তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অংশ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সপ্তাহের শেষদিকে দেশটির কিছু অংশের তাপমাত্রা ১১৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৭ সেলসিয়াস) পর্যন্ত পৌঁছানোরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ইউরোপের দেশ গ্রিসের পর্যটন কেন্দ্রগুলো উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে প্রচুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা আগের সময়গুলোর রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রা দুর্বল লোকজন ছাড়াও বৃদ্ধ এবং শিশুদের জন্য অধিক ক্ষতিকর।

এই প্রতিবেদনটিতে শরীরে তাপের প্রভাব এবং কীভাবে ঠাণ্ডা থাকা যায় সে সম্পর্কিত কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো।

প্রচণ্ড তাপ আমাদের শরীরে কী করে?

শরীর গরম হওয়ার সাথে সাথে আমাদের রক্তনালীগুলো প্রসারিত হতে শুরু করে। এটি রক্তচাপ কমিয়ে দেয় এবং সে সময় হৃদপিণ্ডকে পুরো শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বেগ পেতে হয়। ফলে চুলকানি, ফোসকা পড়া বা রক্তনালী ফুটো হয়ে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

একইসাথে প্রচুর ঘামে শরীর থেকে পানি এবং লবণের পরিমাণ কমতে থাকে। যা কোনও কোনও ক্ষেত্রে শরীরের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

এছাড়া উচ্চ তাপমাত্রায় আরও কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন:

১) মাথা ঘোরা

২) বমি বমি ভাব

৩) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

৪) পেশীতে ব্যথা

৫) মাথাব্যথা

৬) ক্লান্তি ও ঠাণ্ডা

৭) ফ্যাকাসে এবং আঠালো ত্বক

রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও তৈরি হয়।

কেন এমন হয়?

মূলত আমরা যতো তাপমাত্রাতেই থাকি না কেন আমাদের শরীর আমাদের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (৩৭ সেলসিয়াস) রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু গরম যতো বাড়ে আমাদের শরীরকে তা কমিয়ে আনতে ততো বেশি কাজ করতে হয়।

শরীর তাপ কমাতে তখন ত্বকের কাছাকাছি রক্তনালীগুলোকে আরও বেশি প্রসারিত করে দেয় এবং ঘাম শুরু হয়।

গরম থেকে নিরাপদে থাকতে করণীয় কি?

অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) কিছু পরামর্শ দিয়েছে:

১) উপযুক্ত পোশাক পড়তে হবে। যা হালকা এবং ঢিলেঢালা ফিটিংয়ের।

২) যত বেশি সময় সম্ভব শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় থাকতে হবে। বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকলে, শপিং মল বা পাবলিক লাইব্রেরিতে যাওয়া যেতে পারে।

৩) স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে কল করে জেনে নেওয়া যেতে পারে কোনও এলাকায় তাপ-ত্রাণ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে কিনা।

৪) তাপমাত্রা ঠাণ্ডা না হলে বাইরের কাজকর্ম কমিয়ে দিন এবং অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় নয়- এমন কাজ পরে করুন।

৫) প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন এবং খুব বেশি অ্যালকোহল পান করবেন না।

৬) বাইরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এবং চওড়া টুপি পড়ুন।

৭) বয়স্ক এবং শিশুদের সহায়তার পাশাপাশি যারা একা ঘরে থাকে- নিয়মিত তাদের খোঁজ নিন।

৮) লক করা গাড়িতে কাউকে, বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং পশুপাখি রেখে যাবেন না।

এছাড়া ঘুমানোর সময় পাতলা চাঁদর ব্যবহারেরও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তথ্য সূত্রঃ হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স