প্রায়ই বহুতল ভবনে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কথা শোনা যায়। এ জন্য দায়ী করা হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসিকে। নানা গাফিলতির কারণে এসির বিস্ফোরণ বাড়ছে। তাতে অনেকে মারাও যাচ্ছেন। তাই এসির ব্যবহার বাড়লেও এটি ব্যবহারে হতে হবে সতর্ক।
দেখা যায়, শীতকালে এসি অচল থাকার পর গরমের শুরুতে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করে চালানোর কারণেই বিস্ফোরণ ঘটছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে বছরে অন্তত তিনবার এবং বিশেষভাবে শীতকালের শেষে এসির রক্ষণাবেক্ষনের তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম বলেন, এসির সার্ভিসিং নিয়মিত করা হয় না। ফলে এসির পাইপলাইন এবং গ্যাস সিলিন্ডারে ব্লক তৈরি হয়। এতে গ্যাস প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং একটা পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এছাড়া দু-তিন এসি মাস না চালানোর কারণে লিকুইড বাষ্প হয়ে যায়। সেই অবস্থায় এসির কার্যক্রম হলে কম্প্রেসারে বেশি চাপ পড়ে। এখান থেকে বিস্ফোরণ হতে পারে।
এ ছাড়া একেকটি এসি বসাতে ভবনের বাইরে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সেই পরিমাণ জায়গা দেয়া হচ্ছে না। একটা মেশিনের গরম আরেকটা মেশিনে ছড়িয়ে পড়ছে, যেখান থেকে বিস্ফোরণ হচ্ছে। একেকটি এক টন এসি ১৫০ স্কয়ার ফুটের বেশি জায়গায় যেন চালানো না হয়, সে বিষয়েও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এবার আসুন জেনে নিই এসি বিস্ফোরণের কারণ এবং কী করলে এর থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
বিস্ফোরণের কারণ:
১. এসির পাওয়ার ক্যাবল সঠিক স্পেক-এর ব্যবহার না করলে।
২. এসির কনডেনসারে ময়লা থাকলে কম্প্রেসারে হাই টেম্পারেচার ও হাই প্রেশার তৈরি হয়ে।
৩. এসির ভেতরের পাইপের কোথাও ব্লকেজ হলে এসির ভেতরে হাই প্রেশার তৈরি হয়ে কম্প্রেসার ব্লাস্ট হতে পারে।
৪. কম্প্রেসারের লিমিটের চেয়ে বেশি রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করলে হাই প্রেশার তৈরি হয়ে।
৫. কম্প্রেসারে প্রয়োজনীয় পরিমাণ রেফ্রিজারেন্ট না থাকলে ভেতরের তাপমাত্রা লিমিটের চেয়ে বেড়ে গিয়ে।
৬. সঠিকভাবে এসির ভ্যাকুয়াম না করলে।
৭. কম্প্রেসারে সঠিক পদ্ধতিতে রেফ্রিজারেন্ট চার্জ না করলে কম্প্রেসারে হাই প্রেশার তৈরি হয়ে।
৮. সঠিক রেটিংয়ের সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার না করলে।
আরও পড়ুন: ঝুঁকি নিয়ে সকাল থেকে ফের উদ্ধারকাজ শুরু
এসি বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়:
১. ভালো মানের এবং সঠিক স্পেকের পাওয়ার ক্যাবল ব্যবহার করা।
২. এসির কনডেনসার নিয়মিত পরিষ্কার রাখা।
৩. কম্প্রেসারে হাই টেম্পারেচার ও হাই প্রেশার পরীক্ষা করা।
৪. এসির ভেতরের পাইপের কোথাও ব্লকেজ আছে কি না, তা পরীক্ষা করা।
৫. কম্প্রেসারে প্রয়োজনীয় রেফ্রিজারেন্ট আছে কি না, তা অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত কোম্পানির টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করা।
৬. কম্প্রেসারের লিমিটের চেয়ে বেশি রেফ্রিজারেন্ট চার্জ না করা।
৭. সঠিকভাবে এসির ভ্যাকুয়াম করা।
৮. কম্প্রেসারে সঠিক পদ্ধতিতে রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করা।
৯. বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের এসি, কম্প্রেসার এবং রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা।
১০. নিম্নমানের অখ্যাত বা নকল ব্র্যান্ডের এসি ও কম্প্রেসার কেনা এবং ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।
১১. সঠিক রেটিংয়ের সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা।