গরমে খাবার দেখেই অনেক সময় পেট ভরে যায়। কারণ, গলা শুকোলে পানিই যথেষ্ট। প্রচন্ড গরমেও নিজেকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন সবুজ শাক সবজি। এতে পেট যেমন ঠান্ডা থাকবে। আপনিও থাকবেন তরতাজা। সঠিক ক্যালরি জোগান হবে। তবে এই সময়ে খাবারদাবার নিয়ে একটু সতর্ক থাকাই ভালো। নইলে নানা রকমের পেটের সমস্যা, যেমন বমি, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, গ্যাস অথবা বদহজমেরে মতো রোগ হতে পারে। তাই গুণাগণ দেখে খাদ্য তালিকায় রাখুন এই ৫টি সবজি।
পটল
১. পেট ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি পটলে থাকা কম ক্যালরির মাত্রা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
২. দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক পটল।
৩. যেকোনও গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় উপকারী।
৪. পটলে রয়েছে রক্ত পরিষোধক গুণ ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলার গুণ।
৫. সাধারণ সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর প্রতিরোধ করে পটল।
৬. হজমে সহায়ক পটল। লিভারকেও সুস্থ রাখে।
৭. পটলে থাকা ভিটামিন এ ও সি ফ্রি র্যাডিকলস-এর সঙ্গে লড়াই করে ত্বকের বার্ধক্য রুখে দেয়।
৮. পানি কম খাওয়ার কারণে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিনে্যর সমস্যায় ভোগেন। তাদের জন্য নিয়মিত পটল খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
৯. দেহের ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়ক।
ঝিঙে
১. গ্রীষ্মে শরীরে পানির প্রয়োজন মেটায় ও পেট ঠান্ডা রাখে ঝিঙে।
২. অ্যাসিডিটির সমস্যা রোধ করে।
৩. যাঁরা স্বাস্থ্যসচেতন ও ওজন নিয়ে বিব্রত তাঁরা অনায়াসে ঝিঙে খেতে পারেন। কারণ এতে ক্যালরির মাত্রা কম।
৪. ডায়েবেটিক রুগিদের জন্য উপকারী ঝিঙে।
৫. অকালপক্কতা রোধ করে ঝিঙে।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে ঝিঙে।
৭. লিভার ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক ঝিঙে।
৮. এতে থাকা ক্যালশিয়াম, কপার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
উচ্ছে
১. আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি-এর উৎস উচ্ছে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও মরশুমি সর্দি-কাশি ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।
২. ফাইবারে ভরপুর উচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক।
৩. উচ্ছেতে থাকা ইনসুলিন গোত্রের উপাদান পলিপেনটাইড পি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৪. দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায় উচ্ছে।
৫. দেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখে উচ্ছে।
৬. ত্বক ও চুলের নানা সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি, এগজিমা, সোরিয়াসিস প্রতিরোধ ও কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ত্বককে রোদের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচায় উচ্ছে।
৭. লিভার ও ব্ল্যাডার সুস্থ রাখতে সহায়ক উচ্ছে।
৮. কম ক্যালরি, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও কমাতে সহায়ক উচ্ছে।
৯. ব্লাড পিউরিফাই করে শরীর ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে উচ্ছে।
লাউ
১. ক্যালরির মাত্রা কম থাকায় ওজন কমাতে সহায়ক লাউ।
২. হজমে সাহায্য করে, সঙ্গে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যাও প্রতিরোধ করে লাউ।
৩. শরীর ঠান্ডা রাখে। লাউয়ের ৯২ শতাংশ পানীয় উপাদান হওয়ার দরুণ দেহে পানির প্রয়োজন মেটায়।
৪. হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে লাউ।
৫. দেহে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক লাউ।
৬. ডায়াবেটিসের রুগিদের রক্তে শর্করার মাত্রা ও রক্তচাপ ঠিক রাখতে সহায়ক লাউ।
৭. এতে থাকা ভিটামিন সি, বি, কে, এ, আয়রন, ফোলেট, পটাশিয়াম শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৮. ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন কমায়।
৯. স্ট্রেস কমাতে সহায়ক লাউ।
১০. পোস্ট ওয়ার্কআউট ড্রিঙ্ক হিসেবে লাউয়ের রস খেলে দেহে গ্লুকোজ লেভেল ঠিক থাকে।
সজনে ফুল ও ডাঁটা
১. জ্বরে মুখে রুচি ফেরানোর জন্য সজনে ফুল উপকারী।
২. ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে সজনে।
৩. যে কোনও ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন সারিয়ে তুলতে সহায়ক সজনে ফুল।
৪. এতে থাকা এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড যেমন আইসোলিউসিন, লিউসিন, লাইসিন ও ক্যালশিয়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৫. সজনে ফুল ও ডাঁটায় থাকা ভিটামিন বি, সি, ও, কে ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৬. সজনের ব্লাড পিউরিফায়িং প্রপার্টি ব্রণ-ফুসকুড়ি জাতীয় সমস্যা কমাতে সহায়ক।
৭. সজনতে থাকা বি কমপ্লেক্স ভিটামিন খাবার হজমে সাহায্য করে।