বেডরুম বা শয়নকক্ষের কিছু ভালো অভ্যাস সম্পর্ক যেমন মধুর করতে পারে, তেমনি অপছন্দের কিছু অভ্যাস বিষিয়ে তুলতে পারে দাম্পত্য জীবন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুম আমাদের জীবনের সবক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। ঘুম ভালো হলে দেহ-মন সুস্থ থাকে।
সুখী সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ঘুম। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ট্রিনের মনোবিজ্ঞানী লি ল্যান্ড বলেন, দুজন মানুষ যদি শূন্যতা অনুভব করেন, তখন পারস্পরিক খেয়াল রাখা ও ভালোবাসার ক্ষেত্রে কম সাড়া দেন। নিঃসন্দেহে বলা যায়, কম ঘুম হলে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কে চিড় ধরতে দেখা যায়। ঘুমের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিছানায় যাওয়ার আগে দম্পতিদের অভ্যাসগুলো সম্পর্কে প্রভাব ফেলে। যে বাজে অভ্যাসগুলো সম্পর্কে প্রভাব ফেলে তার কয়েকটি সম্পর্কে জেনে নিন:
রোমান্টিক সময়কে অবহেলা করা
সুখী দাম্পত্যের চাবিকাঠি হিসেবে বেডরুমকেই বিবেচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সুজান উইন্টারের মতে, দাম্পত্যে আদর-সোহাগের মাধ্যমে বন্ধন তৈরি হয়। বেডরুমের অভ্যাসগুলো ভালো হলে দুজনের অন্তরঙ্গতা বাড়ে। এটি সুখী দাম্পত্যের লক্ষণ। এই রোমান্টিক সম্পর্ককে অবহেলা করলে ধীরে ধীরে সম্পর্কের বাঁধন আলগা হতে শুরু করে।
বিছানায় ফেসবুক-টুইটার
বিছানায় শুয়ে স্মার্টফোন টিপতে শুরু করলে রোমান্টিক সম্পর্কের সময় কখন? অনেকেই বিছানায় ফেসবুক-টুইটার নিয়ে আসেন। মেলোডি লি নামের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, স্মার্টফোনের মতো এমন কোনো প্রযুক্তি সম্পর্কের ক্ষেত্রে এতোটা একাকিত্ব সৃষ্টি করেনি। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কে অসন্তুষ্টির কারণ স্মার্টফোনে অতি নির্ভরতা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, সম্পর্ক মধুর করতে বিছানায় আসার দু-এক ঘণ্টা আগে স্মার্টফোনকে বিদায় জানাতে হবে। এ সময়টা দুজন গল্প করে কাটাতে পারেন।
খোলামেলা আলোচনা
শয়নঘরে দুজন মানুষ যদি নিজেদের মধ্যে কথা না বলে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তবে সম্পর্ক ভালো হবে কীভাবে? দুজন খোলামেলা বিশ্বস্ত আলোচনা সুস্থ সম্পর্কের জন্য জরুরি। বিশেষজ্ঞ উইন্টার্স বলেন, দাম্পত্য জীবনে পিলোটক বা ঘনিষ্ঠ আলাপ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুজনের মধ্যে আলোচনার সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। উষ্ণতা আর স্নেহে ভরা ওই সময়টুকু পরবর্তী দিনের মেজাজ ঠিক করে দেয়। সম্পর্কের স্থায়িত্ব বাড়ায়।
মন খারাপ করে ঘুমাতে যাওয়া
দাম্পত্য জীবনের জুটিরা নিশ্চয় জানেন, রাগ করে ঘুমাতে যেতে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমাতে যাওয়ার আগে বাজে স্মৃতি নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া ঠিক নয়। সম্পর্ক ভালো করার জন্য সমস্যা মিটমাট করে ঘুমাতে যাওয়া ভালো। অনেকে আবার এ নিয়ে একমত নন। অনেক সময় সমস্যা মিটমাট হয় না বলে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। সকালটাও বাজে হতে পারে। দুজন শান্ত হয়ে, ঠিকমতো বিশ্রাম নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
পৃথক ঘুমানো
গবেষকেরা বলেন, কিছু সময় বা কয়েক ঘণ্টা বা একরাত হয়তো পৃথক ঘুমানো ভালো। তবে দীর্ঘ সময় ধরে দুজনের আলাদা থাকা ঠিক নয়। মনোবিজ্ঞানী র্যাচেল সুসম্যান বলেন, দুজন আলাদা সময় ঘুমাতে যাওয়া ইতিবাচক হতে পারে। কারণ, প্রত্যেকে আলাদা সময় পায় এবং ভালো ঘুমাতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই পৃথক থাকার বিষয়টি যেন দুজনের মধ্যে দূরুত্ব না বাড়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, ১৮ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/সাদ