ভারতে লকডাউনের পনেরো দিন কেটেছে। কোলাহল, ব্যস্ততা থেকে দূরে থাকা আপনাকে চারপাশের পরিস্থিতি ভয় পাওয়াচ্ছে রোজ। এ এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা। বাইরে বেরোলে সংক্রমণ । বাড়ি থাকলে তল খুঁজে না পাওয়া এক ভবিষ্যৎ। ভিতরে জমতে থাকা দুশ্চিন্তা, অবসাদ আপনার আত্মবিশাসেও খানিক থাবা বসিয়েছে ঠিক করোনার মতোই?
এ এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা। মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে থাকার অক্ষম প্রচেষ্ঠা। বাইরে বেরুলে করোনার সংক্রমণ, বাড়িতে থাকলে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। ভিতরে জমতে থাকা দুশ্চিন্তা, অবসাদ আপনার আত্মবিশ্বাসও ভেঙেচুরে দিতে চাইছে। এমন দমবন্ধ পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজেকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখবেন সেই উপায় বাতলে দিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট সাইকোলজিস্ট, অভিনেত্রী সন্দীপ্তা সেন।
সন্দীপ্তা বললেন, “ প্ল্যান করে আদপে কিছুই হয় না। সবাই প্রায় বাড়িতে। কী অপেক্ষা করছে কেউ জানি না। এ অবস্থায় সবচেয়ে আগে দরকার নিজের রোজের লাইফস্টাইলটাকে স্বাভাবিক রাখা। আমাদের মস্তিষ্ক হঠাৎ করে এই বিশাল চেঞ্জটা নিতে পারে না। সেখান থেকে মনের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। যার রেজাল্ট অবসাদ, দুশ্চিন্তা। অফিস যাওয়ার তাড়া নেই, ল্যাদ খেয়ে দেরি করে উঠলাম। একেবারেই করবেন না। যেমন উঠতেন আগে, সে রকম রুটিন মেনে চলুন। অবসাদ কাটাতে সন্দীপ্তা যে উপায়গুলির কথা বললেন
১, ডিসিপ্লিনটা ভাঙতে দেওয়া চলবে না। যেমন সময়ে উঠতেন তেমন সময়েই উঠুন।
২, ঘরের অনেক কাজ থাকে। সেখানে নিজেকে যুক্ত করুন।
৩, সারাক্ষণ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ নয়। সেখানকার ফেক নিউজ আরও চিন্তা বাড়াবে।
৪, আপনার এই কদিনেই দম বন্ধ হয়ে আসছে? বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক মানুষটার কথা ভাবুন। লকডাউন হোক বা না হোক, তাঁকে কিন্তু একাই থাকতে হয়।এই সময় তাঁকে সময় দিন।
৫, পুরনো শখ ঝালিয়ে নেওয়ার সময় এখন। আঁকতে ভালবাসতেন? তাই করুন। বিয়ের পর নাচ ছেড়ে দিয়েছেন। এই তো সময়। আবার ঝালিয়ে নিন।
৬, লুডো, দাবার মতোই ইনডোর গেম খেলতে পারেন।
৭, মেডিটেশনও করতে পারেন।
৮, খুব প্যানিকড হয়ে পড়লে ইউটিউবে রিলাক্সেশন ভিডিয়ো দেখে নিতে পারেন। ভাল লাগবে।
বাস্তব বুঝে নিজেও তাই করছেন সন্দীপ্তা। ঘর গোছাচ্ছেন,গাছে জল দিচ্ছেন, বাবা মায়ের সঙ্গে বসে লুডো খেলছেন নিয়ম করে। কে জিতছে? \”মা-ই এগিয়ে। আমি সেকেন্ড পজিশনে।আর বাবা একদম শেষে।\” হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি। কী হবে তা নিয়ে আগে থেকে সাত পাঁচ ভাবতে তিনি চান না। অর্থকষ্ট, চাকরি যাওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা যে আসতে চলেছে তা মাথায় রেখেই এগনোর বার্তা তার। সব ঝড় থেমে যাবে এক দিন, আশাবাদী সন্দীপ্তা।