কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় ২০১৬ সালে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩ জনকে খালাস দেয়া হয়। এ সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরী গ্রামের মো. হাজী আতর আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ তোতা (৩৮), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে কামাল হোসেন (৪৮), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মো. মামুন (২৮), মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে মো. বাবুল (৩৫) ও মৃত আনোয়ার আলীর হারুনুর রশিদ (৪৫)। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞ জেলা পিপি এডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরীর মৃত জুনাব আলীর ছেলে হায়দার আলী (৬৫), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আ. মান্নান (৩২), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), আ. খালেকের ছেলে আবুল বাশার (২৮), মৃত আ. রশিদের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত আ. খালেকের ছেলে আ. কাদের (৩২) ও এজহার বহির্ভূত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়া’র ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৪৫)।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, একই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. আমান (৪০) ও একই উপজেলার গ্রাম চৌয়ারা’র জুনাব আলী মো. সেলিম মিয়া (৫০)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার হন একই এলাকার মো. গিয়াস উদ্দিন ও মো. জামাল হোসেন। তারা সম্পর্কে চাচাতো জেঠাতো ভাই।
মামলার বিবরণে জানাযায়, ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট রাতে ধনাইতরী জামতলা এলাকায় একটি দোকানে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মো. তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়াসহ আসামিরা মো. গিয়াস উদ্দিন ও জামাল হোসেনকে এলোপাথারি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। আশংকাজনক অবিস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রথমে মো. গিয়াসউদ্দিনকে পরে জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) বাদী হয়ে ১২জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামি মো. হারুনুর রশীদ ও আ. কুদ্দুসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে ৬জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রত্যেককে অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এসময় আসামি আমান ও মো. সেলিমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন আদালত।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী জেলা পিপি এডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম সেলিম ও অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মো. মজিবুর রহমান বাহার।