প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে করা মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাত আসামি। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে নেয়ার সময় টুপিতে মুখ লুকিয়ে রাখেন আবেদ আলী।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেল ৩টার পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের ১৬৪ ধারায় আলাদা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
কারাগারে নেয়ার জন্য আদালত থেকে একে একে সাত আসামিকে গাড়িতে তোলা হয়। এ সময় সৈয়দ আবেদ আলীকে নিজের মাথার টুপি দিয়ে মুখ ঢেকে আদালত থেকে বের হতে দেখা যায়। এ অবস্থাতেই গাড়িতে ওঠেন তিনি। তবে বাকিরা স্বাভাবিকভাবেই গাড়িতে ওঠেন।
এর আগে দুপুরে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় গ্রেফতার ১৭ আসামিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আলাদা সাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এছাড়া অপর ১০ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তিনি। পরে ১০ আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়া সাত আসামি হলেন: পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং বেকার যুবক লিটন সরকার।
কারাগারে পাঠানো ১০ আসামি হলেন: পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, নোমান সিদ্দিকী, প্রিয়নাথ রায়, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. মামুনুর রশীদ
এবং সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
বিসিএসের প্রশ্নফাঁস নিয়ে পিএসসির বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেসবুকে সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্টগুলো ভাইরাল হতে থাকে। এ ঘটনায় সোমবার (৮ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা করে। মামলায় ১৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।