আল্ট্রাসনোগ্রাম করার সময় নারী রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পাবনার একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সড়কের নিউ মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আটক করা হয়। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে তিনজনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় মামলার এজাহার দায়ের করেন।
আটককৃতরা হলেন- পাবনা পৌর সদরের শালগাড়িয়া থানাপাড়া মহল্লার ডা. শোভন সরকার (২৮) ও নিউ মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শালগাড়িয়া ইংলিশ রোড মহল্লার জীবন আলী (৩০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা এলাকার জনৈক এক ব্যক্তি তার স্ত্রী (২২)কে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সড়কে নিউ মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। নির্ধারিত কক্ষে প্রবেশের পর চিকিৎসকের সহকারি ওই গৃহবধূর তলপেটে জেল মেখে প্রস্তুত করে। এ সময় অভিযুক্ত ডা. শোভন সরকার তার সহকারিকে বাইরে চলে যেতে বলেন। তখন ডা. শোভন আল্ট্রাসনোগ্রাম করার সময় ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে যৌন হয়রানি করেন। পরে বাধ্য হয়ে ওই গৃহবধূ আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষের বাইরে গিয়ে তার স্বামীকে ঘটনা খুলে বলেন। ভুক্তভোগীর স্বামী অভিযুক্ত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য এসব করেছে বলে জানান।
ভুক্তভোগীর স্বামী ঘটনার প্রতিবাদ করলে সেখানে উপস্থিত নাজমুল হোসেন (২৭) নামের এক যুবক তাকে মারতে উদ্যত হন ও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। চিকৎকার চেঁচামেচি শুনে ক্লিনিক মালিক জীবন আলী সেখানে গিয়ে বলেন, ডাক্তার কোনো অন্যায় কাজ করেননি, আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে এমনটা করতে হয়। তখন ক্লিনিক মালিক জীবন ও নাজমুল ভুক্তভোগীর স্বামীকে ক্লিনিক থেকে বের হয়ে যেতে বলেন এবং না গেলে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেন।
পরে ভুক্তভোগী ও তার স্বামী পাবনা সদর থানায় গিয়ে পুলিশের আশ্রয় নেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ক্লিনিক থেকে ডা. শোভন ও ক্লিনিক মালিক জীবনকে আটক করেন। আরেক অভিযুক্ত পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর টাংকারপাড়া এলাকার শরীফ হোসেনের ছেলে নাজমুল পলাতক রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে মামলার এজাহার দিয়েছেন। আটককৃতদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হবে।